হাইকোর্ট
হাইকোর্ট

গাইবান্ধা-৫: সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ৪ জনকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) মো. ইসাহাক আলীসহ চার কর্মকর্তাকে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা থেকে অবিলম্বে প্রত্যাহার বা বিরত রাখতে এবং তাঁদের স্থলে নতুন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশন সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অপর তিন কর্মকর্তা হলেন সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাদেকুজ্জামান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব ও ফুলছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন।

স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

সাঘাটা, ফুলছড়ি ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাড়া অন্য যেকোনো উপজেলা থেকে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলী (ট্রাক প্রতীক) ১ জানুয়ারি সিইসি বরাবর একটি আবেদন দেন।

এ আবেদনের ভাষ্য, ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর আসনটিতে উপনির্বাচন হয়। তখন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদ হাসান প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করে নির্বাচন সম্পন্ন করার চেষ্টা করেন। নির্বাচন পরিস্থিতি ইসি কর্তৃক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় তখন একযোগে সব কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ নিয়ে প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রমাণিত হয়েছে।

ফারজানা রাব্বী গাইবান্ধা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে। ওই আবেদনে ফারজানা রাব্বী অভিযোগ করেন, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার অনেক কর্মকর্তা ও সাতটি কলেজের অনেক শিক্ষক নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারসহ লিফলেট বিতরণ করে ভোট প্রার্থনা করছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদ হাসান ও তাঁর সমর্থকেরা ট্রাক প্রতীকের কর্মী ও সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছেন এবং বলছেন, স্থানীয় প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করে ২০২২ সালের ১২ অক্টোবরের মতো পরিবেশ সৃষ্টি করে ভোটের ফলাফল নৌকার পক্ষে নেবেন।

সিইসি বরাবর আবেদন দিয়ে ফল না পেয়ে ফারজানা রাব্বী গতকাল মঙ্গলবার রিটটি করেন, যার ওপর আজ শুনানি হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন ও এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান খান; সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আরিফ চৌধুরী। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোকাররামুছ সাকলান ও মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রুলে ১ জানুয়ারি করা আবেদন অনুসারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে, বিশেষ করে গাইবান্ধা-৫ আসনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ চার কর্মকর্তাকে এবং ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর আসনটিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে অনিয়মে অভিযুক্ত সব প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরাতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সিইসি, ইসি সচিব, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (রিটার্নিং কর্মকর্তা), জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।