জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করার আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আর একজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গুলিবিদ্ধ চার শিক্ষার্থী হলেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ফেরদাউস, প্রথম বর্ষের ফয়সাল কামাল, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এইচ এম নাসিম ও মার্কেটিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. অনিক। এ ছাড়া হিসাববিজ্ঞান বিভাগের তাইফ আহমেদ ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন।
ফেরদাউস, ফয়সাল কামাল, এইচ এম নাসিম ও মো. অনিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাইফ আহমেদ একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পূর্বঘোষণা অনুসারে আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সমাবেশের কর্মসূচি ছিল। তবে বেলা তিনটা থেকেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আরিফ হোসেন ছোটনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে তাঁরা ক্যাম্পাসের দিকে আসা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে একত্র হয়ে ধাওয়া দিলে তাঁরা সরে যান। এরপর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন।
আন্দোলনকারী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীদের মিছিলটি রায়সাহেব বাজার এলাকায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা মিছিলে হামলা চালান। শুরু হয় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। একপর্যায়ে গুলি চালানো হয়। এতে চার শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, চার শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ছুরিকাঘাতে আহত এক শিক্ষার্থীকেও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা ও গুলিতে চার শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনার পর আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধিদল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তারা শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানায়। দাবি পূরণে উপাচার্যের আশ্বাস পেয়ে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাদেকা হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল দেখা করতে এসেছিল। তারা নিরাপত্তা ও শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয়ের বিষয়ে কথা বলেছে। এসব বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করেছি।’ তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও অন্যান্য দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি সভা করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সবাইকে সংযত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।