বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ৫ নভেম্বর

বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা। রোববার দুপুরে নগরের সদর রোডের একটি হোটেল মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

জ্বালানি তেল ও নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি।

আজ রোববার বেলা ১১টায় বরিশাল নগরের সদর রোডের একটি হোটেলের মিলনায়তনে ওই সমাবেশ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা হয়। সভা চলে বেলা তিনটা পর্যন্ত। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতিতে দেশ আজ দেউলিয়ার পথে। এত দিন সরকার দেশের মানুষকে উন্নয়নের ফাঁকা গল্প শুনিয়েছে। এখন সেসব মিথ্যা গল্প ফাঁস হয়ে গেছে।

বিএনপির নেতারা বলেন, অবৈধ সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে অত্যাচার, হত্যা, নির্যাতন মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানিসহ নানা নিপীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে গুলি চালিয়ে হত্যা করছে নিরীহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের। কিন্তু এসব করে সরকার নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না। এবার এক দফার আন্দোলন শুরু হয়েছে। বিএনপির ডাকে দেশের মানুষ রাজপথে নেমেছে। এ গণজাগরণকে গুলি চালিয়ে, নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে দমন করা যাবে না। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবেন।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী সোহেলের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দীয় ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান, কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের প্রধান জহির উদ্দীন স্বপন, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, মাহবুবুল আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য এ বি এম মোশারফ হোসেন, নজরুল ইসলাম মোল্লা, মেজবাহ উদ্দীন, আবুল হোসেন খান প্রমুখ।

সভায় বিএনপি নেতারা বলেন, দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নামতে হবে। জনগণ এই সরকারের পদত্যাগ চায়। সেই চাওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, তারেক রহমানকে দেশ ফেরাতে হবে। তাঁদের নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই এখন প্রতিটি নেতা-কর্মীর অভীষ্ট লক্ষ্য। আমাদের দাবি এখন একদফা আর সেটা হলো বর্তমান অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সেই নির্বাচন অবশ্যই নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীন হতে হবে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা এখন দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি। এই লড়াই এখন এক দফার আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে কাজ করতে হবে।’

সেলিমা রহমান বলেন, খালেদা জিয়া এই সরকারের অত্যাচার, নির্যাতন ও মিথ্যা অন্যায়ের সাজা ভোগ করার পরও এক সেকেন্ডের জন্যও মাথা নত করেননি, আপস করেননি। এই সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিনয়ে দিতে আজকের এ আন্দোলন। আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশ দিয়ে হামলা চালিয়ে এবং খুন-জখম ও গ্রেপ্তার করে সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বিএনপির দুর্বার আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না। বিএনপিকে রাজপথ থেকে কোনোভাবেই সরানো যাবে না।

তিনি এক দফা দাবির পক্ষে বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে দলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

সভায় বরিশাল মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতারা ছাড়াও পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী জেলা বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশের স্থান এখনো নির্ধারণ হয়নি। তবে বরিশাল জিলা স্কুল মাঠ, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানসহ কয়েকটি স্থানে সমাবেশ করার ব্যাপারে মত আছে। তিনি বলেন, আগামী ৫ নভেম্বর নির্ধারিত দিনেই এ সমাবেশ করার ব্যাপারে প্রস্তুতি চলছে।