চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে জায়গা দখল করে নিজ নামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করে ভুক্তভোগী পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী উপজেলার সরল ইউনিয়নে ৫০ শতক জায়গা দখল করে নিজ নামে বিদ্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বর্তমানে বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। এই জায়গার মালিক ২১ জন। কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী সংসদ সদস্য থাকার সময় এই জায়গা দখল করে নিজ নামে বিদ্যালয় করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জমির মালিকদের একজন আমিনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, তাঁদের জায়গা জবরদখলের প্রতিবাদ করায় তাঁকে ও তাঁর ভাইকে মারধর করা হয়। মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারেও পাঠানো হয়েছিল। ছয় মাস কারাগারে ছিলেন। তিনি কারাগারে থাকার সময় পুকুর ভরাট করে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত বছর বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়নি।
আমিনুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকার যদি অধিগ্রহণের মাধ্যমে বিদ্যালয় নির্মাণ করে, তা নিয়ে তাঁদের কোনো আপত্তি নেই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বিদ্যালয় হলেও আপত্তি নেই। বিনা পয়সায় দান করে দেবেন। তবে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নামে বিদ্যালয় হতে দেবেন না।
আমিনুল ইসলাম চৌধুরী নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী দাবি করে তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
তবে জায়গা দখল করে বিদ্যালয় নির্মাণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, যাঁরা জায়গা দাবি করছেন, তাঁদের যদি দলিলপত্র থাকে, তাহলে আদালতে মামলা করছেন না কেন? মামলা করলে তো সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
নিজেদের পারিবারিক জায়গার ওপর বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। তিনি বলেন, তাঁর এলাকায় কোনো উচ্চবিদ্যালয় নেই। তাই এলাকার মানুষের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য বিদ্যালয় নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যালয় যাতে না হয়, সে জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনি বিদ্যালয়ের পক্ষে। কিন্তু বিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এটি নিয়ে যাতে কোনো ধরনের অঘটন না ঘটে, সে জন্য বিদ্যালয়ের বর্ধিতাংশের ভবনের নির্মাণকাজ স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণকাজ নিয়ে কোনো আপত্তি নেই।