বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেও বাংলাদেশের ওপর অনেক দেশের কুদৃষ্টি রয়েছে। বাংলাদেশে বসে অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে তিনি কাউকে অনুমতি দেবেন না
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকার (গোপালগঞ্জ-৩) নেতা–কর্মীদের সঙ্গে নির্বাচন-পরবর্তী শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি, স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি আরও বলেন, ‘এই ষড়যন্ত্র দুই ভাগে বিভক্ত। এক হচ্ছে খুনি বা অপরাধী, যুদ্ধাপরাধী; যাদের বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে। আরেকটি আন্তর্জাতিক স্তরের।’ শেখ হাসিনা বলেন, অন্যান্য কারণ ছাড়াও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের ওপর অনেক দেশের কুদৃষ্টি রয়েছে। তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশে বসে অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালাতে তিনি কাউকে অনুমতি দেবেন না এবং মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ, আমরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করব, আমরা আকারে ছোট হতে পারি, কিন্তু আমাদের বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে, তারাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তাঁকে এবং আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আসতে না দেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু দেশের মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে তার উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না এটাই স্বাভাবিক এবং সে কারণেই বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, আগামী দিনে নতুন সরকারকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে চলতে হবে।
দ্রুত মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রিসভা গঠনে বিলম্বের যৌক্তিকতা কী? তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করি না, আমরা জানতাম নির্বাচন করব, আমরা নির্বাচনে জিতলে বা নির্বাচনে হেরে গেলে আমরা কী করব।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি প্রতিটি দিন ব্যবহার করতে চান। কারণ, তিনি দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখতে সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে সবার কাছে দোয়া কামনা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখাই হচ্ছে নতুন মেয়াদে তাঁর সরকারের মূল কাজ।
বাজারে খাদ্যদ্রব্যের কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে বড় ধরনের কোনো সমস্যা দেখি না, তবে নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ এবং রাজধানী ঢাকায় বসবাসকারী মানুষ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।’ তিনি বলেন, মনে হচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল জনগণের ভোগান্তি বাড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যথাযথভাবে তদারকি বাড়াতে হবে।’
দেশে নিজের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ইয়েমেনে হুতিদের ওপর হামলার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে আরেকটি আঘাত আসতে পারে। তিনি দেশে উৎপাদন বাড়ানোর ওপরও জোর দেন।