জ্বালানি সাশ্রয়ে অন্যান্য সিদ্ধান্তের পাশাপাশি সরকারি অফিসের সময় দুই ঘণ্টা কমিয়ে আনার বিষয়েও প্রস্তাব থাকলেও এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন অফিস সময় কমানোর সিদ্ধান্ত অবস্থা বুঝে নেওয়া হবে। প্রয়োজন না হলে সব কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী এই কথা বলেন।
অফিস সময় কমানো হবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন ‘আমরা ধীরে ধীরে ম্যানেজের দিকে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আলোচনা-পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে। যদি দেখি যে বিদ্যুৎ ব্যবহার কম করে পুরো সময় অফিস করতে পারছি, তাহলে কিন্তু অফিসের সময় কমানোর দরকার নেই। আমরা পর্যালোচনার মধ্যে আছি যে কোনটা করলে ভালো হয়। এটি নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা করা হবে। তবে এখন আমাদের ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করলে চলছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার সব কর্মকাণ্ডকে স্বাভাবিক গতিতে রেখেই সব কাজকে চালিয়ে নিতে চায়। তাই প্রয়োজন না হলে সব কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলবে। তিনি বলেন ‘সময়ের এক ফোঁড় অসময়ে দশ ফোঁড়’। সরকার যথার্থ সময়েই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক হতে হবে। সবাইকে বার্তাও দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে বলেছেন, সবাই আরেকটু সতর্ক হয়ে আরেকটু বেশি সাশ্রয় করা যায়। সারা দেশে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি-কর্মচারী আছেন। সবাই যদি নিজ নিজ অফিসে বিষয়টি ব্যবস্থাপনা করে চলেন, তাহলে এটি করা সম্ভব।
করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাতের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ওপর বেশ ভালোভাবেই পড়েছে। কয়েক মাস ধরেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম চড়া। বিশ্বব্যাপী জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকার একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের পর এখন সরকারি সব দপ্তরে বিদ্যুতের ২৫ শতাংশ ব্যবহার কমানো, জ্বালানি খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের ব্যবস্থা করাসহ নতুন করে গতকাল বুধবার আরও আট দফা সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া এর আগে গত সোমবার চলমান জ্বালানিসংকট পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আরেক বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং জ্বালানি তেল আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর পাশাপাশি ডিজেলচালিত সব বিদ্যুৎকেন্দ্রও আপাতত বন্ধ থাকবে।
এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমবে। আর বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণে সারা দেশে দিনে এক ঘণ্টা লোডশেডিং করবে বিদ্যুৎ বিভাগ, যা গত মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে কার্যকর হয়েছে। শপিং মল, দোকানপাট রাত আটটার মধ্যে বন্ধেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ২০ জুন থেকে সারা দেশে সব ধরনের আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি অফিসের সময় দুই ঘণ্টা কমিয়ে আনার বিষয়েও প্রস্তাব আছে।