রাজিয়া সুলতানা
রাজিয়া সুলতানা

‘পাগল তুই যে যাবি, আমাকে বলি যাবি না?’ কেঁদে বললেন রাজিয়ার মা

সাফজয়ী নারী ফুটবলার রাজিয়া সুলতানা মাঠে ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। সন্তান জন্মদানের পর আবার দ্রুত খেলায় ফিরতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ফিরতে পারলেন না। ১৩ মার্চ রাতে সন্তান জন্মদানের কয়েক ঘণ্টা পর তিনি মারা যান।

কালীগঞ্জের মৌতলায় জাতীয় দলের ফুটবলার রাজিয়া সুলতানার বাড়িতে পৌঁছাতে স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগিতা নিয়েছিলাম আমরা। স্থানীয় সাংবাদিক সামনে, আমি ও সহকর্মী কল্যাণ ব্যানার্জী পেছনে। তিনি মোটরসাইকেলের ব্রেক কষে ইঙ্গিত দিলেন, আমরা পৌঁছে গেছি। একটু অবাকই হলাম। নাহ্‌, নামফলক দূরে থাক, এ বাড়ির ফটকই নেই। ঢোকার মুখে অবিন্যস্ত খড়ের গাদা, সরু একচিলতে উঠানের দুই পাশে জীর্ণ সব কুটির।

রাজিয়াদের বাড়িতে যাই ১৯ মার্চ। ভেতরে ঢুকতেই এক নারী গায়ে আছড়ে পড়ে কাঁদতে লাগলেন। আকাশ-বাতাস বিদীর্ণ করে দেয় সেই আওয়াজ। তিনিই রাজিয়ার মেজ বোন নাজমা খাতুন। আমি তাঁকে সামলে নেওয়ার সুযোগ দিলাম। বেশ খানিকটা পর খোঁজ চাইলাম রত্নগর্ভা মায়ের।

বুঝলাম, কাছেই উবু হয়ে বসে যে নারী ঘুঁটে দিচ্ছেন, তিনিই আবিরন বেগম—রাজিয়া সুলতানার মা। আমাদের অনুরোধে কাছে এসে বসলেন, বললেন না কিছুই। শিশুটির খোঁজ নিই। জানতে পারি বাবা ইয়াম রহমান ছেলেকে নিয়ে গেছেন। ঢাকায় একটি পোশাকশিল্প কারখানায় কাজ করেন তিনি, স্থায়ী নিবাস রাঙামাটি।

তার হাঁডুটা আল্লাহ কি দে যে বানায়েছিল! তা কেবল আল্লাহ পাকই জানে। যে জোর ছিল, বাপরে বাপ। বসন্তপুরে যেবার খেলতে গেছিল, একাই সাতটা (গোল) করিছে।
ছোটবেলার খেলার সাথি ইয়াছিন সরদার

আপাতত রাজিয়ার ছেলে দাদির কাছে রাঙামাটিতেই থাকবে। ততক্ষণে পাশের বাড়ি থেকে লাঠি ঠকঠকিয়ে রাজিয়ার ছোট চাচা সাকের আলী সরদার, আত্মীয়স্বজন, ছোটবেলার খেলার সাথি, পাড়া-প্রতিবেশী এসে হাজির। রাজিয়া তাঁদের সবার। মৌতলার সব মানুষের মুখ উজ্জ্বল করে দিয়ে তিনি এখন কবরের অন্ধকারে একা আছেন।

কেমন ছিলেন আমাদের রাজিয়া সুলতানা? চকচক করে ওঠে বোনটির চোখ। ছোটবেলার খেলার সাথি, গ্রাম সম্পর্কের মামি, এক বছরের বড় যে ভাই, যাকে চোখের আড়াল করতে দিত না, সবাই প্রতিযোগিতায় নামে। আট বছর বয়স থেকে রাজিয়ার খেলার শুরু। মামাতো-চাচাতো ভাইদের সঙ্গে সেও গরু চরাতে যেত। মার্বেল খেলত। জাম্বুরা হোক বা হাওয়া চলে যাওয়া বল, রাজিয়া গোল দেবেই। ছোটবেলার খেলার সাথি ইয়াছিন সরদার বলছিলেন, ‘তার হাঁডুটা আল্লাহ কি দে যে বানায়েছিল! তা কেবল আল্লাহ পাকই জানে। যে জোর ছিল, বাপরে বাপ। বসন্তপুরে যেবার খেলতে গেছিল, একাই সাতটা (গোল) করিছে।’

রাজিয়া প্রথম পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় উভাকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট খেলে। এরপর টানা অনূর্ধ্ব-১৩ থেকে অনূর্ধ্ব-১৯ ও জাতীয় দলে। ছিলেন ২০১৮ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সদস্য। সেই ১১ বছর বয়স থেকে মৃত্যুর আগপর্যন্ত দেশের ভেতরে ও দেশের বাইরে ভারত, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ ও সিঙ্গাপুরে যত জায়গায় খেলেছেন, সব খেলায় অংশগ্রহণের কার্ড যত্ন করে তোলা আছে।

ওর ভয় ছিল হাসপাতালে গেলেই অস্ত্রোপচারে শিশুর জন্ম হবে। তিনি আর মাঠে ফিরতে পারবেন না। মাঠে না গেলে খাবেন কী? খাওয়াবেনই-বা কী?

উভাকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রাজিয়ার প্রথম টুর্নামেন্টের ছবি দেখি। জ্বলজ্বলে চোখ—সব বাধা ডিঙিয়ে চূড়ায় পৌঁছানোর মতো প্রত্যয় তাতে। ধারাবাহিকভাবে ছবিতে ওকে বড় হতে দেখি। জাতীয় দলের জার্সিতে যখন খেলেছেন চুল তখন ছোট, মাথার মাঝখানে স্পাইক করা। হাসতে হাসতে নাকি বলেছিলেন, জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনার পরামর্শে এই স্টাইল। এভাবেই নাকি ভালো দেখায়।

উপস্থিত লোকজনের কাছে জানতে চাই, রাজিয়ার খেলা দেখতে গেছেন কখনো? সমস্বরে সবাই বলেন, হ্যাঁ। এত মানুষ কী করে গেলেন? জবাবে জানলাম বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের সময় স্কুল কর্তৃপক্ষই বাসের ব্যবস্থা করেছিল, পুরো গ্রামের মানুষ হইহই করে সে খেলা দেখতে গেছেন। রাজিয়ার সঙ্গে ছিলেন তাঁর মেজ বোন নাজমা। মুখে খই ফোটে তাঁর, ‘আমি তখন মাদ্রাসায় পড়ি। কিন্তু রাজিয়ার খেলা হবি, আর আমি দ্যাখপ না, সঙ্গে যাব না, তা তো হয় না। এখানে-ওখানে ওরে নিয়ে বেড়ায়েছি। একবার খেলা দেখতে গেছি। শুনি গ্যালারি থেকে চিৎকার করতিছে ওরে রাজিয়ারে আটকা, রাজিয়ারে। ওরে আটকাতি পারলিই হবে।’ এবার মুখ খুললেন বৃদ্ধ ছোট চাচা সাকের সরদার, ‘নেপালে গিয়ে একবার আটকা পড়িছিল ওরা। ওই যে ভূমিকম্প না কী হয়িছিল। আমারে ফোন করিছিল, বলিছিল ছোট চাচা চিন্তা কোরো না। আমরা ফিরি আসব।’

রাজিয়ার বেড়ে ওঠা কেমন ছিল? খেলোয়াড় মেয়ে, পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে যত্ন–আত্তিটা নিশ্চয়ই একটু হলেও বেশি হতো! মাছ-মাংস, দিনে অন্তত একটা ডিম, এক গ্লাস হলেও দুধ...অন্তত?

আমাদের রাজিয়া তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েও মাঠে নেমেছিলেন। খেললে মাসে আট হাজার টাকা, নইলে হাত শূন্য। নিজে কী খাবেন, গর্ভের শিশুটি, মা-ভাই ওরা?

আমি আবিরন বেগমের হাত ধরি। চোখের দিকে তাকাই। ডুকরে কেঁদে উঠে মা বলেন, ‘মনে অনেক কষ্ট নিইয়ে চইলে গেছে আমার পাগলটা। আমার পাগল যে কী কষ্ট করিছে। আমার পাগলের দ্বারে কেউ একটু দাঁড়ায়নি।’

ওর যত্ন হতো খালা? জানতে চাই। জবাবে আবিরন বলেন, ‘বাপের ছিল টিবি (যক্ষ্মা), আমি বাড়ি বাড়ি জন (দিনমজুরি) দিই। বাড়ির আঙিনায় দুটো পেঁপেগাছ ছিল। ওই পেঁপেসেদ্ধ আর ভাত। মাঝে মাঝে বিলের শাকপাতা। কোনো দিন ঝাল (মরিচ) দিতি পারিছি, কোনো দিন পারিনি। মাছ-মাংস, ডিম-দুধ কুথাত্থে আনি দেব? পাশের বাসায় একদিন ট্যাংরা মাছ কাটছিল, তাই দেখি বড় ছেলে বায়না জুড়িছিল, মা একদিন অমন ট্যাংরা মাছ খাওয়াবা?’

জানলাম, ভ্যানচালক বাবা টিবিতে ভুগে ২০১৮ সালে মারা যাওয়ার পর থেকে গোটা সংসার রাজিয়ার কাঁধে। প্রধানমন্ত্রী ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন, সেই টাকা দিয়ে বাড়ির চারটি পিলার উঠেছে কেবল। চারদিকে এত ধারদেনা, এত অনটন, বাবা ও পিঠাপিঠি ভাই ফজলুল হকের অসুস্থতা, চিকিৎসার অনেক খরচ।

প্রায়ান্ধকার মাটির ঘরের দাওয়ায় বসে আমি নিজেও হতাশায় ডুবতে বসেছি। টুকরো টুকরো কথা তখনো কানে আসছে, ‘প্রথম বুটটাও কিনে দিয়েছিল টিএনও (ইউএনও)। আব্বা চলি যাওয়ার পর থেকি ও-ই সব করিছে। ও কোলপোঁছা বাচ্চা। সবার ছোট। জীবনটাকে কষ্ট নিয়ি গেল। না দুটো ভালো-মন্দ খাবার পারিছে, না পরতি পারিছে। এই যে ওর জামা গা দি বসি আছি। এ কি একটা পরার মতো জামা! এ কথা কলিই বলত, একদিন ভালো দিন আসপে। এমন দিনই আসল, সন্তানটা পর্যন্ত বুকে ধরি রাখতি পারল না।’

কত টাকা পেতেন রাজিয়া? পরিবারের লোকজন জানান, খেলা চললে মাসে আট হাজার টাকা। গত কয়েক মাস খেলেননি, টাকাও পাননি।

রাজিয়া তো বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পর অভাব ঘোচেনি কিছুটা? ঘোচেনি। স্বামী অল্পস্বল্প হাতখরচ দিতেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন থেকে ৮-১০ হাজার টাকা। মোটের ওপর ওই। মাস ছয়েক আগে ফজলুল হক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, যমে-মানুষে টানাটানি। রাজিয়া গর্ভাবস্থার কথা গোপন করেই মাঠে নেমেছিলেন। সেই টুর্নামেন্টে সাতক্ষীরা স্পোর্টস একাডেমি, লেকভিউ সিটি, চিংড়ি-বাংলা ক্লাব ও এআর স্পোর্টিং ক্লাবে জাতীয় দলের সব খেলোয়াড় ভাগ হয়ে খেলেছিলেন। রাজিয়াও কিছু টাকা পেয়েছিলেন। সেই টাকায় পরে ভাইয়ের চিকিৎসা হয়।

কত টাকা পেতেন রাজিয়া? পরিবারের লোকজন জানান, খেলা চললে মাসে আট হাজার টাকা। গত কয়েক মাস খেলেননি, টাকাও পাননি।

রাজিয়াকে হাসপাতালে নেননি কেন? পরিবারের লোকজনের কাছে জানতে চাই। বললেন, রাজিয়া যেতে রাজি হননি। বাসার কাছে একটা স্বাস্থ্যশিবির হয়েছিল। ওখানে গিয়েছিলেন। একটা টিকা নিয়ে এসেছিলেন। ওই পর্যন্তই। আপনারা তো জোর করতে পারতেন। গর্ভাবস্থায় অন্তত চারবার চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। কাছেই কমিউনিটি ক্লিনিক ছিল। বললেন, রাজিয়ার জেদের কাছে হার মেনেছেন তাঁরা। ওর ভয় ছিল হাসপাতালে গেলেই অস্ত্রোপচারে শিশুর জন্ম হবে। তিনি আর মাঠে ফিরতে পারবেন না। মাঠে না গেলে খাবেন কী? খাওয়াবেনই-বা কী?

তারপর? ফজলুল হক জানান, কালীগঞ্জ বাজারে দুবার আলট্রাসাউন্ড করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সব ঠিকঠাক ছিল। চিকিৎসক বলেছিলেন, স্বাভাবিক প্রসবে সমস্যা নেই। ১৩ মার্চ বেলা তিনটার দিকে রাজিয়া ভাইকে ফোন করে ধাত্রী সঙ্গে করে বাসায় আসতে বলেন। ফজলুল ধাত্রী ও গ্রাম্য ডাক্তার সঞ্জয় মণ্ডলকে সঙ্গে করে বাড়ি ফেরেন। সবাই একমত হন, সন্তান ভূমিষ্ঠ হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। সঞ্জয় ফিরে যান।

রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রাজিয়ার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। মাটির ঘরের দাওয়ায় তাঁর ভাই ফজলুল হক তখন বসা। ভাইকে ভেতরে ডেকে নিয়েছিলেন রাজিয়া। হাসতে হাসতে ফজলুল বলেছিলেন, ‘রাজিয়া, ছেলের ফেসকাটিং এত সুন্দর, নাক টানতি হবে না রে। হাত-পাও সিরাম সুন্দর। লম্বা লম্বা।’ হঠাৎ রাজিয়া বলেন, তিনি শ্বাস নিতে পারছেন না। তখনই ৯৯৯-এ ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স ডাকে রাজিয়ার পরিবার।

তারপর? মৌতলা ইউনিয়ন থেকে কালীগঞ্জ উপজেলার দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। কালীগঞ্জ থেকে রাজিয়া আর কথা বলছিলেন না, নড়াচড়াও বন্ধ। কিন্তু তাঁদের গন্তব্য আরও দূরে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসকেরা তাঁদের জানান, রাজিয়া পথেই মারা গেছেন। রাজিয়ার মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরেন ফজলু। থামেন তাঁদের বাড়ির সামনেই। এই বাড়ির সামনে কতবার জাতীয় দলের হয়ে খেলে জেতার পর গাড়ি এসে থেমেছিল! গাড়ির দরজা খুলে রাজিয়া যখন নেমেছিলেন, তখন চারদিকে কত উচ্ছ্বাস।

আমার মাথায় কত–কী যে ঘুরছে তখন! মনে হলো, আমাদের রাজিয়া জন মিলিংটন সিঞ্জের আইরিশ ট্র্যাজেডি রাইডার্স টু দ্য সি–এর বার্টলি, মোরিয়ার ছোট ছেলে। বড় ছেলে মাইকেল সাগরের পেটে গেছে, তার শার্ট আর মোজা তীরে ভেসে এসেছে। ৯ দিন হলো, তবু সে উত্তাল সাগরের রোষ কমে না। ওদিকে বাড়িতে নেই একদানা খাবার। হয় গোটা পরিবারকে না খেয়ে মরতে হবে, নয়তো ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সাগরেই মাছ ধরতে যেতে হবে বার্টলিকে। মা বারবার বার্টলিকে টেনে ধরছেন, কিন্তু...খাবার জুটবে কোথা থেকে? বেপরোয়া বার্টলি ঘর থেকে বেরোলেন আর ফিরলেন না। আমাদের রাজিয়া তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েও মাঠে নেমেছিলেন। খেললে মাসে আট হাজার টাকা, নইলে হাত শূন্য। নিজে কী খাবেন, গর্ভের শিশুটি, মা-ভাই ওরা?

তা-ও স্বপ্নেরা ডানা মেলেছিল। ছোটবেলার খেলার সাথি ইয়াসিন সরদারের ছেলে টুকটুক করে হেঁটে বেড়ায়। তাকে দেখে রাজিয়া বলেছিলেন, ‘কী সুন্দররে তোর বিটা! আমার অমন একটা ছেলে হলে গোছায় গাছায় রাখব দেখিস। সে–ও ফুটবল খেলপি।’ ছেলেকে ‘গোছায় গাছায়’ কোনো ফুটবল একাডেমিতে নিয়ে যেতে পারেননি রাজিয়া। ফুটবল মাঠে ১১টা খেলোয়াড় মিলে যাঁকে ধরাশায়ী করতে পারেনি, দারিদ্র্যের কাছে তিনি হার মেনেছেন। নেপালের ভূমিকম্প এড়িয়ে জীবন বাঁচিয়েছিলেন, দারিদ্র্যের কাছে তিনি মারা পড়লেন।

রাজিয়ার পরিবারকে বিদায় জানাই। নাজমার বছর দুয়েকের মেয়েটা খালি পায়ে উঠানময় হেঁটে বেড়াচ্ছে। তিন দিন পর বাড়িতে চুলা জ্বলেছে। খাবারের মেনু সেই ভাত আর পেঁপেসেদ্ধ। এক ফোঁটা তেল কেনার টাকা নেই ঘরে। আবিরন বেগম মেয়ের পদক আর পরিচয়পত্র হাতের মুঠোয় ধরে কেঁদে ফেললেন, ‘খালি বলত, ভালো দিন আসপে মা, আসপে। এই ভালো দিন আসল? পাগল তুই যে যাবি, আমাকে বলি যাবি না?’

  • দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব আগামীকাল: ফুটবলার রাজিয়ার জন্য আমরা কে কী করেছি