চট্টগ্রামে প্রায় ছয় বছর আগে ওমর ফারুক নামের এক তরুণ আইনজীবীকে খুনের মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে তৃতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দুই আসামি হলেন রাশেদা বেগম ও হুমায়ুন রশিদ। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন আল আমিন, পারভেজ আলী ও আকবর হোসেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এক আসামি খালাস পেয়েছেন। এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া তিন আসামির প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। অনাদায়ে আরও দুই মাস করে কারাদণ্ড।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে হুমায়ুন ও পারভেজ রায় ঘোষণা সময়ে উপস্থিত ছিলেন। অন্যরা পলাতক।
ফারুক চট্টগ্রাম আদালতে আইন পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে বারে তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন। ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার থানা এলাকার একটি বাসা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ফারুক খুনের ঘটনায় তাঁর বাবা আলী আহমেদ চকবাজার থানায় মামলা করেন। সূত্রহীন এ খুনের ঘটনায় হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ-সমাবেশসহ কর্মবিরতি পালন করেছিলেন।
মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের মধ্যে চারজন আদালতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তদন্ত শেষে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর তৎকালীন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা ২০১৮ সালে ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। বিচারে ২৯ সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। মামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয় গত ১২ এপ্রিল। আজ রায় ঘোষণা করা হলো।
আদালতে পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, মাদক মামলায় দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি কারাগারে যান। তাঁর জামিন নিতে স্ত্রী রাশেদা যোগাযোগ করেন আইনজীবী ফারুকের সঙ্গে। এ সম্পর্কের সূত্রে রাশেদাকে গোপনে বিয়ে করেন ফারুক। কিন্তু তিনি সামাজিক-পারিবারিক স্বীকৃতি দেননি। একপর্যায়ে ফারুককে বিয়ে করানোর জন্য তাঁর পরিবার মেয়ে খুঁজতে শুরু করে। এ খবর জানতে পেরে রাশেদা তাঁর স্বীকৃতি আদায়ে মরিয়া হয়ে ওঠেন। ব্যর্থ হয়ে তিনি প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে বন্ধু হুমায়ূনসহ অন্যদের সঙ্গে নিয়ে তিনি ফারুককে খুন করেন।