দেশে ৬ মাসে ফেসবুক ব্যবহারকারী কমেছে সোয়া কোটি

ফেসবুক
ছবি: রয়টার্স

করোনা মহামারি শুরুর পর বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যায়। সম্প্রতি এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির মূল প্রতিষ্ঠান মেটা জানায়, ফেসবুকে সক্রিয় ব্যবহারকারী দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষ তিনে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার পোল্যান্ডভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম নেপোলিয়নক্যাটের তথ্য বলছে, বাংলাদেশে গত ৬ মাসে প্রায় সোয়া কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারী কমেছে।

নেপোলিয়নক্যাটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী ছিল গত বছরের জুলাই মাসে। এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৫ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় প্রায় ৪ কোটি ৬৫ লাখ ৪৮ হাজার। অর্থাৎ ছয় মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ৯৫ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী কমেছে।

ন্যাপোলিয়নক্যাটের তথ্য বলছে, গত বছরের জুলাইয়ের পর থেকে বাংলাদেশ ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমেছে।

নেপোলিয়নক্যাটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ ফেসবুক ব্যবহার করে। যার মধ্যে পুরুষ ব্যবহারকারী প্রায় ৬৮ শতাংশ। বয়সের দিক থেকে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীরা সবচেয়ে বেশি (৪৪ শতাংশ) ফেসবুক ব্যবহার করে।

নেপোলিয়নক্যাট ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনলাইন ডেটা নিয়ে কাজ করা ডাটারিপোর্টালের তথ্যও বলছে, বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী কমছে।

ডাটারিপোর্টাল বলছে, বাংলাদেশে ফেসবুকে বিজ্ঞাপনদাতারা যতসংখ্যক ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছাতে পারত, সেই সংখ্যা গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারির মধ্যে ৩৭ লাখ (৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন) কমে গেছে।

মেটার বাকি দুই সেবা ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বাংলাদেশে গত ৬ মাসে ধারাবাহিকভাবে কমেছে। নেপোলিয়নক্যাটের তথ্যমতে, এই সময়ে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ লাখ ৭০ হাজার কমেছে। আর মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমেছে ১ কোটি ১ লাখ ৪১ হাজার। সবচেয়ে বেশি কমেছে মেসেঞ্জার ব্যবহারকারীর সংখ্যা।

পেশাজীবীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম লিংকডইনের ব্যবহার এমনিতেই বাংলাদেশে কম। গত বছরের ডিসেম্বরে এই প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশি ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫০ লাখের বেশি ছিল। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা কমে ১৮ লাখে নামে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মানুষের সময় কাটানোসহ বিনোদনের জায়গা এখন শুধু ফেসবুকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। টিকটকসহ সমপর্যায়ের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এখন আছে। যেখানে পোস্ট দেওয়া ছাড়াও ব্যবহারকারীরা নিজেরা সরাসরি নানা কার্যক্রম করতে পারে। এ ছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও মানুষ বিনোদন পাচ্ছে। ট্রেন্ড পরিবর্তনমুখী। এসব কারণে মেটার সেবাগুলোর ব্যবহার বাংলাদেশে কমতে পারে।