প্রথমবারের মতো পূর্ণ দূরত্বের আয়রনম্যান প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করলেন বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদ মো. সাজেদুর রহমান। বাংলাদেশ পেল নতুন আরেকজন আয়রনম্যান। গতকাল রোববার জার্মানির হামবুর্গে আয়রনম্যান ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে আয়রনম্যানের নির্ধারিত দূরত্ব অতিক্রম করেন।
সাঁতার, সাইক্লিং ও দৌড়ের সমন্বয়ে যে খেলা, সেটির নাম ট্রায়াথলন। এক দিনে কঠিনতম ট্রায়াথলন হিসেবে ধরা হয় আয়রনম্যান আয়োজনকে। পূর্ণ দূরত্বের আয়রনম্যান ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ হামবুর্গে ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার সাঁতার, ১৮০ কিলোমিটার সাইক্লিং ও ৪২ দশমিক ২ কিলোমিটার দৌড় সম্পন্ন করতে সাজেদুর সময় নিয়েছেন ১৩ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। তিনি ৩৫ থেকে ৩৯ বছর বয়স গ্রুপে অংশ নেন। আয়রনম্যান ট্র্যাকার অ্যাপ ও ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, মোট ২ হাজার ৩২৭ প্রতিযোগীর মধ্যে সাজেদুরের অবস্থান ২ হাজার ১৫৩তম।
আয়রনম্যান ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে আরও এক বাংলাদেশি মাহবুবুর রহমান ৩০ থেকে ৩৪ বছর বয়স গ্রুপে অংশ নিয়েছিলেন। সাঁতার ও সাইক্লিং শেষ করার পর দৌড়ের সময় তীব্র ঠান্ডায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়াতে হয় তাঁকে। জার্মানি থেকে মুঠোফোনে মাহবুবুর রহমান আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল হামবুর্গে হঠাৎ তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। সাঁতার ও সাইক্লিং শেষ করার পর দৌড় শুরু করি। ১০ কিলোমিটার পার হওয়ার পরই ঠান্ডায় আক্রান্ত (হাইপোথার্মিয়া) হই। ২১ কিলোমিটার দৌড়ানোর পর আমার শরীর আর পারছিল না।’ এরপর স্বেচ্ছাসেবকেরা তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে চিকিৎসা দেন। মাহবুবুর রহমান বর্তমানে সুস্থ আছেন।
গতকাল সফল হতে না পারলেও বাংলাদেশি ট্রায়াথলেট মাহবুবুর রহমান ২০১৯ সালে মালয়েশিয়ায় পূর্ণ দূরত্বের আয়রনম্যান সম্পন্ন করেছেন। এ ছাড়া চারটি অর্ধদূরত্বের আয়রনম্যান আসরেও তিনি সফল হয়েছেন। পেশায় ওয়েব ডেভেলপার মাহবুবুর রহমান জার্মানির বার্লিনে থাকেন।
মো. সাজেদুর রহমান পেশাগত–জীবনে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন যুগ্ম পরিচালক। এবারই প্রথম তিনি আয়রনম্যান সম্পন্ন করলেন। এর আগে ২০২২ সালে ফ্রাঙ্কফুর্ট আয়রনম্যানে অংশ নিয়েছিলেন, তবে সেবার সফল হতে পারেননি। হামবুর্গ থেকে আজ মুঠোফোনে সাজেদুর রহমান বলেন, ‘তাপমাত্রা কম থাকায় পানি খুব ঠান্ডা ছিল। এ জন্য সাঁতরাতে বেশ কষ্ট হয়েছে। ৬ ঘণ্টা ৮ মিনিটে ১৮০ কিলোমিটার সাইক্লিং করে, দৌড় সম্পন্ন করেছি একটু ধীরগতিতে। প্রথম থেকেই আমার লক্ষ্য ছিল পূর্ণ দূরত্বের আয়রনম্যান সম্পন্ন করা। প্রথমবার পারিনি, এবার পেরেছি।’
আয়রনম্যানের বৈশ্বিক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন দেশের নিয়মিতভাবে আয়রনম্যান ও আয়রনম্যান ৭০.৩ আয়োজন করে থাকে। এসব আয়োজনের পর প্রতিবছর আয়রনম্যান ও আয়রনম্যান ৭০.৩-এর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। বিভিন্ন আয়রনম্যান আয়োজনে ফলাফলের ভিত্তিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয় ট্রায়াথলেটদের।