সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় দণ্ডিত জামিনে থাকা বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান চিকিৎসার জন্য গত ১১ মে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন। চিকিৎসা গ্রহণ করে তিনি গত ২১ মে দেশে ফেরেন।
আজ রোববার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগে এ তথ্য জানান আমানউল্লাহর আইনজীবী।
এর আগে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেছিলেন আমানউল্লাহ। শুনানি নিয়ে গত ৬ মে আপিল বিভাগ আমানউল্লাহর আবেদন মঞ্জুর করেন। ৯ জুনের মধ্যে আমানউল্লাহকে দেশে ফিরতে বলা হয়। এ বিষয়ে আদালতে কমপ্লায়েন্স (নির্দেশ বাস্তবায়ন প্রতিবেদন) দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে।
আদালতে আমানউল্লাহর পক্ষে কমপ্লায়েন্স দাখিল করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রথম আলোকে বলেন, কমপ্লায়েন্স দাখিলের জন্য আজ তারিখ ধার্য ছিল। চিকিৎসা গ্রহণ করে আমানউল্লাহর দেশে ফেরাসংক্রান্ত কমপ্লায়েন্সটি গ্রহণ করেছেন আপিল বিভাগ।
মামলাটিতে ১৩ বছর কারাদণ্ড দিয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আমানউল্লাহর আপিলের ওপর পুনঃশুনানি নিয়ে গত বছরের ৩০ মে হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রাখা হয়।
এই রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতের গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে আমানউল্লাহকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বছরের ৭ আগস্ট হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণের পর আমানউল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ-১।
এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন আমানউল্লাহ। সঙ্গে ছিল জামিন আবেদন।
লিভ টু আপিলটি গত ৪ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত শুনানির জন্য লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।
শুনানি নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আমানউল্লাহর লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। এরপর নিয়মিত আপিলের পাশাপাশি জামিন চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
শুনানি নিয়ে গত ২০ মার্চ আমানউল্লাহর জামিন মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল বিচারাধীন অবস্থায় আমানউল্লাহ বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে আদালতের (আপিল বিভাগ) অনুমতি নিতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়।
জামিন মঞ্জুরের পর গত ২৫ মার্চ কারামুক্তি পান আমানউল্লাহ। এরপর চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমানউল্লাহ দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। একই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালত আমানউল্লাহকে ১৩ বছর এবং তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।