পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বক্তব্য দেন কমিটির আহ্বায়ক বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। আজ বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বক্তব্য দেন কমিটির আহ্বায়ক বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। আজ বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে

১৭ বছরের পুরোনো সিদ্ধান্তই নিল পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি

চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের উচ্ছেদে আবারও ১৭ বছরের পুরোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কমিটির ২৮তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০০৭ সালে চট্টগ্রামে ভয়াবহ পাহাড়ধসের পর থেকে এই কমিটি প্রায় প্রতিটি সভায় উচ্ছেদ ও সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এটি বাস্তবায়িত হতে দেখা যায়নি সেভাবে।

বছরের পর বছর বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করা হয় না। তেমনি অবৈধ স্থাপনায় পানি বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ বিভিন্ন সেবা–সংযোগও বহাল থাকে। ২০০৭ সালে পাহাড়ধসের ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটি প্রথম পাহাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দাদের উচ্ছেদের সুপারিশ করেছিল। এরপর পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি ওই বছরই প্রথম সভা থেকে এ বিষয়ে সরব ছিল।

১৭ বছর পর আজ ২৮তম সভায় এসেও বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে নির্দেশনা দেন পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার বিকেলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আনোয়ার পাশা, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, রেলওয়ের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে পাহাড়ধসের পর পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। পদাধিকারবলে এই কমিটির আহ্বায়ক বিভাগীয় কমিশনার। সদস্যসচিব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)। জেলা প্রশাসক, সিটি করপোরেশন, সিডিএ, পুলিশ, র‍্যাব, ওয়াসা, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি এই কমিটির সদস্য। আজকের সভায় তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকেরাও অনলাইনে যোগ দেন।

বিভাগীয় কমিশনার সভায় চট্টগ্রাম ওয়াসা, পিডিবি (বিদ্যুৎ) ও কেজিডিসিএল (গ্যাস) প্রতিনিধিদের কাছে অবৈধ সংযোগের বিষয়ে জানতে চান। এ সময় তিনি অবিলম্বে পাহাড়ে অবৈধ সেবা–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার তাগিদ দেন। এ সময় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পাহাড়ের অবৈধ বাসিন্দারা কীভাবে সেবা–সংযোগ পান? এসব বিষয়ে আপনাদের বারবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। এখন আবার উচ্ছেদ অভিযান করে রিপোর্ট দেবেন।

এ ছাড়া সভায় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বৃষ্টির পূর্বাভাসের পর নতুন করে পাহাড় থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান। গত এক বছরে পাহাড়ে একাধিকবার অভিযান চালানো হয় বলে ডিসি ফখরুজ্জামান জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে সভায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পাহাড় থেকে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ এবং তাদের পুনর্বাসন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার; কিন্তু সমস্যা হলো তারা পাহাড় ছেড়ে যেতে চান না। এর পরও আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় তাদের কিছু কিছুকে যে পুনর্বাসন করা হয়নি তা নয়।