বিশেষ সাক্ষাৎকার: আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি

বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান হিসেবে এক দশকের বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। দেশের একমাত্র আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটটিতে কাজ করার সুবাদে মানি লন্ডারিংয়ের অনেক খুঁটিনাটি তথ্য তাঁর জানা। প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপচারিতায় দেশের মানি লন্ডারিং অপরাধ ও তদন্তের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আসাদুজ্জামান

  • দেশ থেকে মানি লন্ডারিং হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে; মাদকের মাধ্যমেও।

  • বাণিজ্যের নামে দেশ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পাচার হচ্ছে।

  • বাণিজ্যের আড়ালে দুনিয়াজুড়ে প্রায় ৮০ শতাংশ মানি লন্ডারিং হয়।

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান
প্রশ্ন

মানি লন্ডারিং মামলায় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অনেক ব্যাংকার আসামি। পেশাজীবীদের মধ্যে এত বেশি ব্যাংকার কেন আসামি হচ্ছেন?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: আর্থিক অনিয়ম কিংবা অপরাধ উদ্‌ঘাটিত হলে দেখা যায়, অপরাধীদের সহায়তাকারী হিসেবে ব্যাংকারদের নাম চলে আসে। মানি লন্ডারিং অপরাধ তো একা একা করা যায় না। এসব অপরাধে ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তারা লোভে পড়ে এতে জড়িয়ে পড়েন।

প্রশ্ন

মানি লন্ডারিং ঠেকাতে বিএফআইইউকে দায়িত্ব দেওয়া আছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। কী কারণে এ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না?

আবু হেনা মো. রাজী হাসান: দেশে ২০০২ সালে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন হয়। তখন এসব মামলার তদন্ত করত বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের অ্যান্টিমানি লন্ডারিং ইউনিট মামলাগুলো দেখভাল করত। মামলা তদন্তে পুলিশের মতোই ব্যাংকারদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁদের এসব মামলার তদন্তের কোনো প্রশিক্ষণ ছিল না। আইন সংশোধন করে ২০০৮ সালে প্রথমে শুধু দুদককে এবং পরে ২০১৫ সালে আরও কয়েকটি তদন্ত সংস্থাকে তদন্তের ক্ষমতা দেওয়া হয়। এসব সংস্থার কর্মকর্তাদের দেশে–বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপরও মামলার তদন্ত কিংবা বিচারে কোনো গতি আসেনি। বিএফআইইউ থেকে তদন্ত সংস্থার কাছে নানা আর্থিক অনিয়মের প্রতিবেদন পাঠানো হলেও সব ঘটনার তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে বিএফআইইউ। তবু দেখা যায়, একেক মামলার একেক রকম ঘাটতি। সাক্ষী পাওয়া যাচ্ছে না কিংবা আদালতে জমা দিতে অনেক পুরোনো কাগজপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। আবার আদালতেও মামলাজট থাকে। পর্যাপ্ত বিচারক নেই।

প্রশ্ন

বাণিজ্যের আড়ালে মানি লন্ডারিং কেন ঠেকানো যাচ্ছে না?

আবু হেনা মো. রাজী হাসান: বাণিজ্যের আড়ালে মানি লন্ডারিং ঠেকাতে বছর দুয়েক আগে বিএফআইইউ একটা নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে। এমন বিস্তারিত নিয়মকানুন পৃথিবীর খুব কম দেশ প্রণয়ন করেছে। পণ্য আমদানি–রপ্তানির ক্ষেত্রে এলসি (ঋণপত্র) কীভাবে যাচাই করতে হবে, কী কী তথ্য লাগবে—সবই নির্দেশিকায় বলা আছে। ব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থাকে এ নির্দেশিকা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে কি না, সেটা দেখার বিষয়। এখানে লাভের বিষয় আছে। এলসি খুললে কমিশন পায় ব্যাংক। ফলে নির্দেশিকা মানতে গেলে এলসি খোলা বাদ দিতে হয়। এক ব্যাংক বাদ দিলে আরেক ব্যাংক সুযোগ নেবে। এসব কারণে বাণিজ্যের আড়ালে মানি লন্ডারিং ঠেকানো যাচ্ছে না।

প্রশ্ন

বিদেশে প্রতিনিয়ত মানি লন্ডারিং হচ্ছে। বাণিজ্যের আড়ালে কিংবা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছে। এসব ঠেকানোর দায়িত্ব কার?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: আইন প্রতিটি সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে। তারা সেই দায়িত্ব পালন না করলে দেশ থেকে মানি লন্ডারিং হবেই। আমরা কী দেখতে পাচ্ছি, কাজ না করেও তো চলে যাচ্ছে। চাকরি তো ঠিক থাকছে। কাজ গুরুত্ব দিয়ে না করলে সমস্যার সমাধান হবে না।

প্রশ্ন

তদন্তের দায়িত্বে থাকা প্রতিটি সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, জনবলের ঘাটতির কারণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। আপনিও কি তাই মনে করেন?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: আমাদের দেশের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে যে অবহেলা, গাফিলতি কিংবা দুর্বলতা রয়েছে—সেটা আন্তর্জাতিক সংস্থা এশিয়া বা প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি) চিহ্নিত করে দিয়েছে। এপিজির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেছে বিএফআইইউ। এপিজি আমাদের বলেছে, অর্থ পাচার ঠেকাতে এখানে ঘাটতি রয়েছে। সেসব ঘাটতি আমাদের পূরণ করতে হবে। সর্বশেষ আমার জানামতে, বিএফআইউতে এক শর বেশি জনবল রয়েছে। এপিজের প্রতিবেদনে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মতো সংস্থার দক্ষতা, জনবল ঘাটতিসহ নানা সমস্যার কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন

হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লুট কিংবা বাংলাদেশিদের মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিন্তু বিদেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যাচ্ছে না বলে তদন্ত আটকে আছে।

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: আমরা জানি, বাংলাদেশ থেকে অমুক দেশে অর্থ পাচার হয়েছে কিংবা যে অর্থ আসার কথা ছিল তা আসেনি। প্রশ্ন হচ্ছে অপরাধীরা এ টাকা কোথায় রেখেছে? সেই সুনির্দিষ্ট তথ্য আনতে না পারলে কারও বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন করা সম্ভব নয়। তথ্য সংগ্রহের প্রাথমিক কাজ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (এফআইইউ) করে। একটা এফআইইউ যখন আরেকটা এফআইইউ থেকে তথ্য আনে, তখন কিছু শর্ত থাকে। সেই শর্তের অন্যতম হচ্ছে এ তথ্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না, আদালতে উপস্থাপন করা যাবে না। আমরা অনেক বড় বড় দেশে তথ্য চেয়েছি কিন্তু বিএফআইইউ সব তথ্য পায়নি। বলে দিল, আমাদের ডেটাবেজে কোনো তথ্য নেই। অথচ আমরা জানি, ওই বাংলাদেশি নাগরিক ওই দেশে যাচ্ছে। পারস্পরিক আইনি সহযোগিতা চুক্তি (এমএলএ) অনুযায়ী, সংস্থাগুলো বলে দেয়, বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছি, বাংলাদেশ থেকে নেওয়া সম্পদ এই দেশে রয়েছে। তখন আবার এমএলএর বিধান অনুযায়ী, তথ্যের জন্য সেই দেশে অনুরোধপত্র পাঠানো হয়। যদি চুক্তি থাকে, তখন সেই দেশ তথ্য পাঠায়। যখন তারা পাঠায়, তখন সেটি কিন্তু পাবলিক ডকুমেন্ট। তখন বাংলাদেশের আদালতে তা উপাস্থপন করে, বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়া অর্থ অবরুদ্ধ করার অনুমতি চাওয়া হয়। আদালত আদেশ দিলে বিদেশ থেকে অর্থ ফেরত আনতে হয়। অনেক দেশে আইন ওই পর্যায়ে নেই। দেখা গেল, বাংলাদেশের আদালত অবরুদ্ধ করেছে, কিন্তু তাদের দেশে অবরুদ্ধ করার আইন নেই। যেমন সুইজারল্যান্ড অনেক পরে মানি লন্ডারিং আইন করেছে। সার্বিক তথ্য সুইজারল্যান্ড দেয় না। সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়। আইন যদি ওই পর্যায়ে না থাকে, তারা অর্থ অবরুদ্ধ না করলে সেই অর্থ আর আসে না। সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে চুক্তি হলে, তারা সহায়তা করলে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব।

প্রশ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা জিএফআইয়ের প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ থেকে শত শত কোটি ডলার মানি লন্ডারিং হচ্ছে। জিএফআই কোন তথ্যের ওপর নির্ভর করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: জিএফআই বাণিজ্যের তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কত টাকা যাচ্ছে কিংবা কত টাকা বিদেশে মানি লন্ডারিং হচ্ছে। পণ্যের কত মূল্য হওয়ার কথা ছিল, কত দেখানো হয়েছে। জিএফআইয়ের প্রতিবেদন কিছুটা আনুমানিক। জিএফআইয়ের তথ্যের উৎস দুটো। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটা মজার ঘটনা ঘটেছে। একটা উৎসের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে টাকা গেছে বেশি। আবার আরেক উৎসের তথ্যে দেখাচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে যত গেছে, তার চেয়ে এসেছে বেশি। তাদেরই প্রতিবেদন কিন্তু স্ববিরোধী। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন দেখা দেয়, আমরা কোনটি বিশ্বাস করব। সব অর্থ বিদেশে চলে গেলে দেশে এই উন্নয়ন কীভাবে হচ্ছে, রিজার্ভ কীভাবে বাড়ছে। বাণিজ্যের আড়ালে যেভাবে মানি লন্ডারিংয়ের কথা বলা হয়, বাস্তবে কি তাই? দেশে তো বাণিজ্যের পরিমাণও বাড়ছে। আমাদের দেশে শক্ত আইন আছে। যাঁরা ঋণখেলাপি, তাঁরা নতুন করে এলসি খুলতে পারছেন না। তবে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, বাণিজ্যের নামে দেশ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ মানি লন্ডারিং হচ্ছে। আবার দেশেও অর্থ আসছে। সত্যটা হচ্ছে, টাকা এক জায়গায় থাকে না। যেখানে সুবিধা পাবে, সেখানে চলে যাবে।

প্রশ্ন

ব্যাংক, বিমাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য বিএফআইইউতে পাঠানো হয়। এসব তথ্য কি বিএফআইইউ বিশ্লেষণ করে?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: সন্দেহজনক লেনদেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য জানা বা নজরদারির জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে একটা সফটওয়্যার নিয়েছে বিএফআইইউ। এই সফটওয়্যার পৃথিবীর অনেক দেশ ব্যবহার করে। সব সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য তো সত্যি নয়। সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এফআইইউ প্রতিদিন গড়ে ৫৫ হাজার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পর্যালোচনা করে। তারা করে স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর সফটওয়্যারের মাধ্যমে। সন্দেহজনক লেনদেন হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্কবার্তা চলে আসে। তখন সেসব লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। তখন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলো সেসব হিসাবধারীর বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়।

প্রশ্ন

দেশে কোন পেশার মানুষ মানি লন্ডারিংয়ে জড়িয়ে পড়ছে বেশি?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: আমাদের দেশ কিংবা আন্তর্জাতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাই মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত থাকেন বেশি। দুনিয়াজুড়ে বাণিজ্যের আড়ালে মানি লন্ডারিং বেশি হয়, যা প্রায় ৮০ শতাংশ। আবার বড় বড় দুর্নীতির মাধ্যমে মানি লন্ডারিং হয়। রাষ্ট্রক্ষমতার বলয়ে থাকা অনেক ব্যক্তি, বরাদ্দ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কেউ কেউ মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত থাকেন। শাসনক্ষমতায় পরিবর্তন হলে আগের শাসকদের দুর্নীতি কিংবা মানি লন্ডারিং উদ্‌ঘাটন করে থাকে।

প্রশ্ন

আমাদের দেশ থেকে কোন কোন দেশে টাকা পাচার বেশি হচ্ছে?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: অনেক উন্নত দেশ বিনিয়োগের নামে উন্নয়নশীল দেশ থেকে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যদি বেগমপাড়ার বা সেকেন্ড হোমের কথা বলি, তারা তো টাকা নিয়ে যাচ্ছে। এসব বিনিয়োগের বিরুদ্ধে যে ধরনের জনমত কিংবা প্রশ্ন তোলা দরকার, সেগুলো তো হচ্ছে না। বিপরীতে গরিব দেশগুলোতে এমন বিনিয়োগ তো যায় না। ফলে তাদের সীমিত সম্পদ যদি বিদেশে পাচার হয়, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ কী? এটা অব্যাহত থাকলে আমাদের দেশটা তো অন্তঃসারশূন্য হয়ে যাবে।

প্রশ্ন

অসাধু ব্যবসায়ীদের বাইরে অন্যান্য পেশার মানুষ কীভাবে কানাডা কিংবা অন্য দেশে অর্থ পাচার করছে?

আবু হেনা মো. রাজী হাসান: বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠালে তো তা ধরা যায়। পৃথিবীতে কিছু আইল্যান্ড স্টেট আছে। ওরা কিছু সুবিধা দেয়। ওই আইল্যান্ডের নাগরিক হলে অবাধে আসতে পারবে। টাকা আনতে পারবে কিংবা নিতে পারবে। অনেকে ওই সব দেশে নাগরিকত্ব নিয়ে টাকা পাচার করে। এর বাইরে দেশ থেকে মানি লন্ডারিং হচ্ছে হুন্ডির মাধ্যমে। মাদকের মাধ্যমেও হচ্ছে। আবার সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশি ১ হাজার টাকার নোট, ৫০০ টাকার নোট নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে তা বিনিময় হচ্ছে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, কীভাবে বাংলাদেশের মুদ্রা সেখানে গেল। হাল আমলে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মুদ্রা পাচার হচ্ছে। অপরাধীরা তো বসে নেই।

প্রশ্ন

সবকিছুর পরও মানি লন্ডারিং চলছে। এ ধরনের অপরাধ রোধে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: অর্থ পাচার প্রতিরোধে দেশীয় সংস্থার পাশাপাশি বৈশ্বিক নানা সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। একটি কিংবা দুটি ঘটনা ধরা যাচ্ছে। একটা ঘটনা ধরতে ধরতে আরও দশটি ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।

প্রশ্ন

রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া কোনোভাবে অর্থ পাচার রোধ সম্ভব নয় বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। আপনিও কি তাই মনে করেন?

আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান: রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া কোনো অপরাধই নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূল করা সম্ভব নয়। আর মানি লন্ডারিংয়ের মতো অপরাধ প্রতিরোধে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি। বাংলাদেশ যখন এপিজির সদস্য হয়, তখন কিন্তু অঙ্গীকার করতে হয়েছিল, আমরা এ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক অঙ্গীকার করছি। অপরাধী যে–ই হোক বিচার করব বলেছি। আমাদের দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করা আছে। তারপরও মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণে আসছে না। পৃথিবীর একক কোনো দেশ এ অপরাধ ঠেকাতে পারবে না। প্রতিটি দেশের যৌথ চেষ্টা থাকতে হবে। একটা সমাজে একা খাঁটি থাকা যাবে না।