চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুলে আজ শনিবার বিকেলে বিস্ফোরণে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে আশপাশের তিন কিলোমিটার দূর থেকেও।
জানা গেছে, বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে এর ফলে দুর্ঘটনাস্থল থেকে উড়ে যাওয়া প্ল্যান্টের একটি লোহার টুকরার আঘাতে আধা কিলোমিটার দূরে এক ব্যক্তি নিহত হন। তাঁর নাম মো. শামসুল আলম। এ সময় তিনি একটি দোকানে বসেছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম।
এ ছাড়া প্ল্যান্টের ধ্বংসস্তূপ থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদৎ হোসেন।
গত বছরের ৫ জুন সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে এমনই এক বিস্ফোরণ ঘটেছিল। বিএম কনটেইনার ডিপো থেকে সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেডের প্ল্যান্টের দূরত্ব আধা কিলোমিটার।
বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের দেয়াল ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে আধা কিলোমিটার এলাকায় বাড়িঘর ও অফিস-আদালত কেঁপে ওঠে। বিকট শব্দে অনেক স্থাপনার কাচ ভেঙে যায়। দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে।
আশু মিয়া নামে সোনাইছড়ির এক বাসিন্দা বলেন, বিকেলে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এরপর আগুন ধরে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে উদ্ধার কাজ চালান।
কামাল উদ্দিন নামে প্ল্যান্টের পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি বলেন, বিস্ফোরণের পর টিন ও লোহার টুকরা উড়ে গিয়ে আশপাশে পড়েছে। এতে অনেকে আহত হন।
দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধারকাজ শুরু করেন। এ সময় দুটি মরদেহ প্ল্যান্টের বাইরে পড়ে ছিল।
মুসলিম উদ্দিন নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, অনেকের হাত-পা কেটে যায়। এখান থেকে উড়ে যাওয়া লোহার টুকরার আঘাতে আধা কিলোমিটার দূরে শামসুল আলম নামের একজন মারা গেছেন।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, আশপাশে টিনের টুকরা পড়ে রয়েছে। প্ল্যান্টটি দুমড়েমুচড়ে গেছে। চারটি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। এগুলোও দুমড়েমুচড়ে যায়।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, অক্সিজেন রিফুয়েলিং করার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও এসপি মো. শফিউল্লাহ দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ডিসি বলেন, বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটা কমিটি করা হয়েছে।