মানি লন্ডারিং মামলা থেকে খালাস পাওয়ার পর বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন
মানি লন্ডারিং মামলা থেকে খালাস পাওয়ার পর বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন

মানি লন্ডারিং মামলা থেকে খালাস পেলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ

মানি লন্ডারিং মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন খালাস পেয়েছেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১–এর বিচারক আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজীব দে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশে অর্থ পাচারের মামলায় খালাস পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আইনজীবী বোরহান উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, হয়রানিমূলক মামলা থেকে খালাস পাওয়ায় তিনি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, ১০ বছর ধরে তিনি আদালতে হাজিরা দিয়ে গেছেন। আজ তিনি হয়রানিমূলক মামলা থেকে খালাস পেলেন।

রায়ে বলা হয়েছে, মন্ত্রী থাকাকালে তিনি বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন বলে দাবি করা হলেও তদন্ত কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। অথচ মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা–কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যেত। এমনকি তদন্তকারী কর্মকর্তা লন্ডনের লয়েড টিএসবি অফসোর প্রাইভেট ব্যাংকের কর্মকর্তা–কর্মচারীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেননি। ওই ব্যাংকে লেনদেনসংক্রান্ত কোনো তথ্যও সংগ্রহ করেননি। অর্থাৎ তদন্তকারী কর্মকর্তার তদন্ত ত্রুটিপূর্ণ ছিল বলেই আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।

আত্মপক্ষ সমর্থন করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন আদালতকে আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকার সময় বৃত্তি নিয়ে পিএইচডি করতে তিনি লন্ডনে যান। ব্রিটিশ সরকারের অনুমোদন নিয়ে সেখানকার একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকতাও করেন। তাঁর স্ত্রী ১৯৭০ সাল থেকে লন্ডনে চাকরি করে মাসে তিন হাজার পাউন্ড আয় করেন। বছরে আয় ছিল ৩৬ হাজার পাউন্ড। তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর যৌথ আয় তিনি লন্ডনের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেন। আদালত রায়ে বলেছেন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং তাঁর স্ত্রীর আয় বৈধ। তাঁর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তাই মামলার অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হলো।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধে এই মামলা করে দুদক। সেই মামলার অভিযোগে বলা হয়, তিনি মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি লন্ডনের একটি ব্যাংক হিসাবে ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ৩৮১ টাকা জমা রাখেন। এই মামলার বিচার শুরু হয় ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর।

মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শুনানি নিয়ে আদালত রায় দিলেন।