হাইকোর্ট
হাইকোর্ট

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু, পরবর্তী শুনানি ৭ নভেম্বর

ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে।

বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার শুনানি গ্রহণ করেন। পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আজ প্রথম দিনের শুনানি হয়। আগামী ৭ নভেম্বর শুনানির পরবর্তী দিন রাখা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রেনেড হামলাসংক্রান্ত হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চে এর আগে শুনানি হয়। গত ১৮ আগস্ট দ্বৈত বেঞ্চটি অবকাশ শেষে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর অবকাশ শুরু হয়। অবকাশ শেষে ২০ অক্টোবর আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয়। অবকাশ শেষে খোলার পর ২৪ অক্টোবর দ্বৈত বেঞ্চ বসেন। সেদিন বেঞ্চটি ডেথ রেফারেন্স ও আপিল কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। এরপর বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে প্রধান বিচারপতি ডেথ রেফারেন্স শুনানি-নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চে পাঠান। এই বেঞ্চে ২৭ অক্টোবর মামলাটি পাঠানো হয়। পরদিন এই বেঞ্চের কার্যতালিকায় ডেথ রেফারেন্স ওঠে।

এর ধারাবাহিকতায় পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আজ শুনানি শুরু হয়। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ বেশ কয়েকজন দণ্ডিত আসামির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান মামলার ঘটনাক্রম তুলে ধরেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার।

এর আগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২১ আগস্টের সেই গ্রেনেড হামলা ও হত্যাযজ্ঞের ঘটনার তদন্তকে ভিন্ন খাতে নিতে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার নানা তৎপরতা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ-সংক্রান্ত মামলা দুটির (হত্যা ও বিস্ফোরক) নতুনভাবে তদন্ত শুরু করে।

২০০৮ সালে ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এতে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে ওই হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। পরে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মামলার অধিকতর তদন্ত হয়। এরপর তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) রায় দেন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দেন বিচারিক আদালত। রায়ের পর ২০১৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলা দুটির নথিপত্র হাইকোর্টে এসে পৌঁছে, যা সংশ্লিষ্ট শাখায় ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।