সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ কার্যক্রম ২২ অক্টোবর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস আগামী ২২ অক্টোবর। ওই দিনই সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতের পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে উপস্থিত থেকে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

সরকারের তৈরি করা বিধিমালা অনুসারে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার পাবে পাঁচ লাখ টাকা করে। আর আহত বা অঙ্গহানির জন্য দেওয়া হবে তিন লাখ টাকা। আজ রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিপূরণ কার্যক্রম উদ্বোধনের তথ্য জানান। সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। সড়ক পরিবহন আইনটি হয়েছিল ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। আইন হওয়ার চার বছরের বেশি সময় পর হলো বিধিমালা।
 
বিধিমালা নিয়ে আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, জানুয়ারি থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ২৪৩টি আবেদন পেয়েছেন তাঁরা। প্রতি আবেদনের সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া আছে। সবকিছু ঠিক হলে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করা হয়।

এটা অব্যাহত থাকবে কি না, জানতে চাইলে নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, এটা অব্যাহত থাকবে। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। আগে যাঁরা হতাহত হয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে, জানতে চাইলে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগেরগুলো আমাদের বিষয় নয়। আর বিধি কার্যকরের আগে তো আমরা যেতে পারছি না।’

২০১৮ সালে সরকার নতুন সড়ক পরিবহন আইন পাস করে। ওই আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য একটি তহবিল গঠনের কথা বলা হয়। গত জানুয়ারিতে এ-সংক্রান্ত বিধিমালা করে সরকার।

বিধিমালা অনুসারে, ক্ষতিপূরণের দাবিগুলো ১২ সদস্যের একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে। আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য ফরম অনুযায়ী দুর্ঘটনা ঘটার সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন দাখিল করার তারিখ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বোর্ডের চেয়ারম্যান অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন। এই কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে আবেদনকারীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন বোর্ডের কাছে দেবে।

প্রতিবেদন দাখিলের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ড আবেদন মঞ্জুরপূর্বক আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিআরটিএর চেয়ারম্যান এই বোর্ডের চেয়ারম্যান। আর্থিক সহায়তার টাকা আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবে ‘প্রাপকের হিসাবে প্রদেয়’ চেকের মাধ্যমে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

এ ছাড়া বিধিমালায় বলা আছে, আর্থিক সহায়তার জন্য আর্থিক সহায়তা তহবিল থাকবে এবং এই তহবিলে মোটরযান মালিক প্রতিটি মোটরযানের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণে বার্ষিক বা এককালীন চাঁদা দেবেন। এ তহবিল গঠনে মোটরসাইকেলের মালিককে এককালীন এক হাজার টাকা দিতে হবে। বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও প্রাইম মুভারের (বড় লরি) জন্য বার্ষিক দেড় হাজার টাকা দিতে হবে। মিনিবাস, মিনি ট্রাক ও পিকআপের জন্য বার্ষিক ৭৫০ টাকা ধার্য হয়েছে। কার, জিপ ও মাইক্রোবাসের জন্য বার্ষিক ৫০০ টাকা দিতে হবে। আর থ্রি-হুইলার ও অন্যদের বার্ষিক ৩০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে।

মোটরসাইকেল ছাড়া অন্যান্য যানের চাঁদা দেওয়ার নির্দিষ্ট মেয়াদ চলে গেলে প্রতি মাস বা মাসের অংশবিশেষের জন্য ৫০ টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হবে।