ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ২৩ শিক্ষার্থীকে ভর্তিতে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগে করা এক আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের উদ্দেশে এ কথা বলেন। শুনানি নিয়ে আদালত আদেশের জন্য ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে ২৩ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের করা পৃথক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট চলতি বছরের ১৬ ও ২১ জানুয়ারি পৃথক রুলসহ আদেশ দেন। আসন থাকা সাপেক্ষে ও আইন অনুসারে ১৫ দিনের মধ্যে প্রথম শ্রণিতে (শিক্ষাবর্ষ–২০২৪) ভর্তি নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এরপর নির্দিষ্ট বয়সসীমার বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ নিয়ে করা অপর চারটি চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ২১ মে রায় দেন হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ। এই রায়ে বয়সসীমা লঙ্ঘিত হওয়ায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে ভর্তির নীতিমালা অনুসারে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন, যা আপিল বিভাগ গত ১৪ জুলাই খারিজ করে আদেশ দেন।
এদিকে উচ্চ আদালতের আদেশ সত্ত্বেও ২৩ শিক্ষার্থীকে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি না করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গত ২৯ সেপ্টেম্বর আবেদন করেন তাদের অভিভাবকেরা। এই আবেদনটি আজ শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম ও আহমদ নকিব করিম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশ সত্ত্বেও ভর্তি না করা এই ২৩ শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে ভর্তিতে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আবেদনকারী অভিভাবকদের তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন তিনি।
পৃথক দুটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ১৬ ও ২১ জানুয়ারি পৃথক আদেশে ২৩ শিক্ষার্থীকে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি নিতে নির্দেশ দেন বলে জানান ২৩ শিক্ষার্থীর অভিভাবকের অন্যতম আইনজীবী আহমদ নকিব করিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পরবর্তী সময়ে হাইকোর্ট এক রায়ে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এসব শূন্য আসনে ভর্তি নিতে নির্দেশ দেন। এসব শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তিতে পিক অ্যান্ড চুজ হচ্ছে। এ অবস্থায় উচ্চ আদালতের আদেশ সত্ত্বেও ২৩ শিক্ষার্থীকে ভর্তি না করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করা হয়। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আদেশের জন্য ১০ অক্টোবর দিন রেখেছেন। এর মধ্যে ২৩ শিক্ষার্থীকে ভর্তিতে রাষ্ট্রপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।