আজ সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আয়োজিত এক সভায় শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন হাফ পাসের ঘোষণা দেওয়া হয়
আজ সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আয়োজিত এক সভায় শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন হাফ পাসের ঘোষণা দেওয়া হয়

কাল থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ৭ দিনই ‘হাফ পাস’

ছুটির দিনসহ সপ্তাহের সাত দিনই শিক্ষার্থীদের জন্য ‘হাফ পাস’ (অর্ধেক ভাড়া) চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বাসে অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার এ সুবিধা পাবেন। এ জন্য শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় অথবা সঙ্গে ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র থাকতে হবে।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব মহানগর (মেট্রোপলিটন) এলাকায় আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

আজ সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আয়োজিত এক সভায় এ ঘোষণা দেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম। সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে মালিক-শ্রমিকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই সভার আয়োজন করা হয়।

মালিক সমিতি ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের (নিসআ) যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া ও পরিবহন খাতের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত শনিবার সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একটি সভা হয়। সেখানেই সপ্তাহে ৫ দিনের বদলে ৭ দিনই হাফ ভাড়া কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। গণ-আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিশেষ অবদানের প্রতি ধন্যবাদ জানাতে এ সিদ্ধান্ত নেন মালিক সমিতির নেতারা।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর সপ্তাহে ৫ দিন (শুক্র-শনিবার ব্যতীত) শিক্ষার্থীদের হাফ পাস চালু করেছিল। সময় ছিল সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা।

মালিক-শ্রমিকদের সচেতনতা সৃষ্টির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক শ্যামল কুমার মুখার্জি। তিনি বলেন, ‘সবাই মিলে যখন দেশকে এই শহরকে ভালোবাসবে, তখন এ দেশের কোনো কিছুই অসুন্দর থাকবে না। নিজেদের জন্য ভালো কিছু করি, প্রজন্মের জন্য ভালো কিছু রেখে যাই।’

সবার মতামত, পরামর্শ সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে দায়িত্ব ও আইনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিকল্পনা তৈরির কথা বলেছেন উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক। তিনি রাস্তায় শৃঙ্খলা আনা ও  সড়ক নিরাপদ রাখার কথা বলেন।

নগর পরিবহনের প্রকল্প যেভাবে অনুমোদিত হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই আবার চালু করার কথা বলেছেন পরিবহন–বিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন আহমেদ। ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার এটিই একমাত্র পথ বলেন তিনি।  

মালিক সমিতির সভাপতি এম এ বাতেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সংস্কার হচ্ছে। পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকদেরও নিজেদের সংস্কার করতে হবে। নিজেদের অনিয়ম ও ভুলগুলো নিয়ে সমালোচনা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি অন্যায় না করি, আইন যদি অমান্য না করি, লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি না চালাই, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় যদি না নামাই, তাহলে সড়ক হবে নিরাপদ ও বিশৃঙ্খলামুক্ত।’

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিআরটিএর পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আবদুর রহিম বকস, মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আলাউদ্দিন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ মেহেদি প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম। সচেতনতা সভায় ঢাকা মহানগরে চলা বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির মালিক ও শ্রমিকেরা উপস্থিত ছিলেন।