ঢাকার ইস্কাটনে জোড়া খুনের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত বখতিয়ার আলম রনিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতই থাকছে। ১০ নভেম্বর দুই দিনের জন্য তাঁর জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। আজ বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন। পাশাপাশি রনির জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আগামী ২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
রনি সাবেক সংসদ সদস্য পিনু খানের ছেলে। ওই মামলায় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি রায় দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ। রায়ে বখতিয়ার আলম রনিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে তিনি আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ৫ নভেম্বর তাঁকে জামিন দেন।
হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ১০ নভেম্বর শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত জামিন স্থগিত করে চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর দিন রাখেন। মামলাটি কার্যতালিকায় পেছনে ছিল। সেদিন ক্রমনুসারে এ মামলা আসার আগেই কার্যদিবস শেষ হয়। তাই আজ শুনানি হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। বখতিয়ারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত বখতিয়ার আলম রনিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আগামী ২ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেছেন। ফলে বখতিয়ার আলম রনির জামিন স্থগিতই থাকছে।
২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল গভীর রাতে নিউ ইস্কাটনে একটি গাড়ি থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে রিকশাচালক আবদুল হাকিম ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব আলী গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ এপ্রিল হাকিম এবং ২৩ এপ্রিল ইয়াকুব মারা যান। এ ঘটনায় হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম ১৫ এপ্রিল রমনা থানায় মামলা করেন। সূত্রবিহীন এ মামলায় তথ্যপ্রযুক্তি ও দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার সহায়তায় সংসদ সদস্যের পুত্রের প্রাডো গাড়ি এবং তাঁর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গাড়ির সূত্র ধরে একই বছরের ৩০ মে এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে রনিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এর পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।