বন্যাকবলিত ফেনী সদর উপজেলার ১০ নম্বর ছনুয়া ইউনিয়নের উত্তর টংগিরপাড় হাজীবাড়ি এলাকায় এক পরিবারের সাতজন আটকে আছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে তাঁদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না পরিবারের আরেক সদস্য।
ওই পরিবারের আরেক সদস্য শিক্ষক ফারজানা আক্তার রয়েছেন অন্য জায়গায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাটি পুরো ডুবে গেছে। শিশুসহ তাঁর পরিবারের সাতজন আটকে আছেন।
ফারজানা আক্তার সর্বশেষ গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে আটকে থাকা তাঁর ভাবি তানিয়া আক্তারের সঙ্গে খুদে বার্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পেরেছিলেন। খুদে বার্তায় ভাবি জানিয়েছেন, তাঁরা সবাই এলাকার একটি মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন। ভবনের একতলা ডুবে দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি পর্যন্ত পানি চলে এসেছে। মসজিদে গ্রামের কয়েক শ মানুষ আছেন। পথঘাট ডুবে যাওয়ায় কেউ বের হতে পারছেন না। এরপর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার ১০ নম্বর ঘোপাল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিজকুঞ্জরা গ্রামে আটকে আছে স্থানীয় কামাল হোসেনের ১২ আত্মীয়। তিন দিন ধরে তাঁরা আটকে আছেন। কামাল হোসেন বলেন, অবস্থা খুব খারাপ। যাঁরা আটকে আছেন, তাঁদের কাছে খাবার পৌঁছায়নি। পানিও শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
কামাল হোসেন জানান, তাঁরা অনেক প্রতিবেশীকে ইতিমধ্যে উদ্ধার করে এনেছেন।
ফেনী জেলার ছয় উপজেলা এখনো পানিতে প্লাবিত। পানিবন্দী হয়ে লাখো মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম—এ তিন উপজেলার পুরোটাই বন্যাকবলিত। সদর ও দাগনভূঞা উপজেলার ৮০ শতাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সোনাগাজী উপজেলার সব ইউনিয়নে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ দুর্ভোগে আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রামে প্রায় এক লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দী অবস্থায় আছে। বন্যাকবলিত প্রায় সব এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। বেশির ভাগ মোবাইল টাওয়ার অকেজো হয়ে পড়ায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।
দুর্গত এলাকায় সুপেয় পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।