সরকারি কর্মকর্তাদের সম্বোধনে শুধুই ‘স্যার’ বলা কতটা ন্যায্য

সংবিধান অনুযায়ী, সব সময়ে জনগণের সেবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য। তাই জনগণকে ‘স্যার’ সম্বোধনে বাধ্য করা কতটা যৌক্তিক।

১৯৮৮ সালের কথা। বন্যায় সারা দেশ ডুবছে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কর্মীরা রাতদিন কাজ করছেন। তখন মুঠোফোন, ফ্যাক্স—কিছুই ছিল না। আমাদের অফিসের টেলিপ্রিন্টারটি ছিল দেশের সব এনজিওর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। আমরা ঘুমালে ইউরোপ-আমেরিকা জাগে। তাই সারা রাত চলত টেলিপ্রিন্টার।

এনজিওগুলোর বিদেশি বরাদ্দ এলে তা ছাড় করাতে হতো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব কমিটি থেকে। নিয়ন্ত্রণকক্ষে ফোনের পর ফোন। সভার পর সভা। প্রেস নোট। সশরীর আসা সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের উত্তর। নিয়ন্ত্রণকক্ষের দুটি ফোনই সব সময় ব্যস্ত। একদিন পরিচালকের পিয়ন বারবার এসে ইশারায় ডাকেন, ‘আপনের ফোন’। পরিচালকের কক্ষে কেউ একজন ফোন করে আমাকে চাইছেন। হাতের ফোনটা কোনোমতে রেখে পড়িমরি করে সিঁড়ি ভেঙে পরিচালকের কক্ষে গেলাম। টেবিলের ওপর রাখা ফোনটা হাতে নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বলি, ‘আসসালামু আলাইকুম, জি ভাই বলেন।’ ওপার থেকে জবাব আসে, ‘ভাই না, ভাই না, আমি জয়েন্ট সেক্রেটারি...’ তখন সদ্য সরকারি চাকরি ছেড়ে, ‘স্যার কালচার’ ছেড়ে ‘ভাই কালচারে’ যোগ দিয়েছি। ফলে বিস্মিত হলেও খুব বেশি চমকাইনি।

‘ভাই’ বলে সম্বোধন করায় এবার চটেছেন একজন এসি ল্যান্ড (সহকারী কমিশনার, ভূমি)। দেশের যেসব জেলায় পদায়ন দেওয়ার আগে আমলাদের ঠিকুজি বিশেষভাবে নিরীক্ষা করা হয়, সে রকম একটি জেলার সদর উপজেলার এসি ল্যান্ড তিনি। ধারণা করা যায়, বিশেষ বাছাইয়ে এগিয়ে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বগুণে গুণান্বিত তিনি। এমনই একজন চৌকস কর্তাকে একজন সংবাদকর্মী একটি প্রতিবেদনের জন্য আদব–লেহাজ মেনে তাঁর একটা বক্তব্য চেয়েছিলেন ফোনে। জমিসংক্রান্ত প্রতিবেদনে ‘এসি ল্যান্ডের’ একটা বক্তব্য নেওয়ার রেওয়াজ থেকেই বোধ করি এ প্রচেষ্টা। যথারীতি সালাম দিয়ে ওই সংবাদকর্মী বলেছিলেন, ‘ভাই যে বিষয়ে ফোন দিয়েছি...।’ সংবাদকর্মীকে আর এগোতে দেননি এসি ল্যান্ড। ওখানেই থামিয়ে দিয়ে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আগে বলেন, আপনি এসি ল্যান্ডকে ভাই কেন বলছেন। আমি আপনার কেমন ভাই?’

এমন প্রশ্নের জন্য মনে হয় তৈরি ছিলেন না সংবাদকর্মী। তিনি বিনয়ের সঙ্গে জানতে চেয়েছিলেন তাহলে কীভাবে সম্বোধন করব আপনাকে? ‘স্যার’ বলব কি? বিরক্ত এসি ল্যান্ড তাঁকে জানিয়ে দেন, ‘আপনার ভাব বেশি। আপনার স্যার ডাকতে হবে না। কিন্তু কখনোই ভাই ডাকবেন না। এটা ফরমাল কোনো ডেকোরাম না।’ মহাবিপদ! ভাইও নয়, স্যারও নয়। তবে কী?

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছড়ার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল স্কুলে ভর্তির অনেক আগেই। কিন্তু তাঁর ছররা মার্কা ছড়ার সঙ্গে পরিচয় হয় ষষ্ঠ শ্রেণিতে। পণ্ডিত স্যার একদিন ভাবসম্প্রসারণের জন্য বেছে নিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই পঙ্‌ক্তি—

কেরোসিন শিখা বলে মাটির প্রদীপে,

ভাই ব’লে ডাক যদি দেব গলা টিপে।

হেনকালে গগনেতে উঠিলেন চাঁদা,

কেরোসিন বলি উঠে, এসো মোর দাদা।...

‘বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়’

ভাই বলে সম্বোধনে আমলাদের আপত্তি, বিরক্তি, অস্বস্তি, উষ্মা প্রকাশ নতুন কিছু নয়। সম্ভবত ২০২০ সালের অক্টোবরে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঠিক একইভাবে সাবধান করে দিয়েছিলেন এক ব্যক্তিকে। সে সময় এ ঘটনার খবর গণমাধ্যমে এসেছিল। ওই ব্যক্তি ইউএনওর আপত্তির মুখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলেছিলেন, ‘আমি তো ডিসি সাহেবকেও ভাই বলি।’ এতে আরও তেতে উঠে ইউএনও বলেন, ‘ডিসি সাহেবকে ডাকছেন ডাকেন। কিন্তু আমাকে ভাই ডাকা যাবে না।’ দিরাইয়ের এ ঘটনা সম্পর্কে তখন একটি অনলাইন পোর্টালে খবরের নিচে আহমদ আনিসুর রহমান নামের এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছিলেন, তিনি সরকারি চাকরির পদ কীভাবে পেলেন? বিষয়টি নিয়ে সে সময় বেশ শোরগোল হয়েছিল। ব্যতিক্রম ছিলেন আবদুল আহাদ। তিনি তখন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক। ঘটনাটি অবহিত করে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি তো সাংবাদিকদের সহকর্মীই মনে করি। আমরা তো কাউকে বলতে পারি না, আমাকে স্যার ডাকেন। এটা নিয়মের মধ্যেও পড়ে না।’

সম্বোধন নিয়ে আপত্তির মধ্যে জনগণ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ‘স্যার নাকি ভাই’—কী বলে ডাকবে জানতে চেয়ে সেবার তথ্য অধিকার আইনে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেন একজন উন্নয়নকর্মী। তার জবাবে বলা হয়, ‘সম্বোধনসংক্রান্ত কোনো আইন বা বিধি জেলা প্রশাসকের দপ্তরে নেই।’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ইকবাল মাহমুদ তখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান। ‘স্যার না ভাই নাকি অন্য কিছু’ বিতর্কের দিকে ইঙ্গিত করে দুদক কার্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা চাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা সেবাগ্রহীতা নাগরিকদের “স্যার” সম্বোধন করবেন, নাগরিকেরা নয়।’

সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার এ বিষয়ে খুব স্পষ্ট করে বলেছিলেন, বিদেশে সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রীদের নাম ধরে ডাকে (নাগরিকেরা)। এ দেশেও এ সংস্কৃতি শুরু করে সবাইকে নাম ধরে ডাকা উচিত। এটাই আন্তর্জাতিক চর্চা। এটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। তবেই এ সমস্যার সমাধান হবে। সন্দেহ নেই, মজুমদার সাহেবের বক্তব্য বিপ্লবী, কিন্তু সেটাই ভবিতব্য।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বছরখানেক আগে বলেছিলেন, ‘আমাদের তো একটা ক্লিয়ার মেসেজ গেছে। আমি বলে দিয়েছি, স্যার বা ম্যাডাম বলার কোনো বিধান নেই। কোনো আইনে নেই যে তাকে এটা বলতে হবে। আমাদের জনগণের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। জনগণের সঙ্গে মিশে যেতে হলে কেউ যদি ভাই বলে, রাগ করার তো কিছু নেই। আমার কাজটা হচ্ছে আপনাকে সার্ভিস দেওয়া।’

তবে ‘ভবী ভুলিবার নয়’

এত মতামত, ইঙ্গিত, বাণী দেওয়ার পরও ‘সালিস মানি, কিন্তু তাল গাছটা আমার’ মনোভাবে কোনো ছেদ বা বিরামচিহ্ন পড়েনি। ‘স্যার’ সম্বোধন আদায়ের জন্য ছোট–বড় নারী–পুরুষনির্বিশেষে আমলাদের ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠতে দেখা যায়। বিষয়টি বিস্ময়করভাবে ছোঁয়াচে হয়ে উঠছে। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে ‘স্যার’প্রীতি নিয়ে আগে খবরাখবর প্রকাশিত হতো। এখন অন্য ক্যাডারের মধ্যেও সেটা সংক্রমিত হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত একজন চিকিৎসককে ‘স্যার’ না ডেকে ‘দাদা’ ডাকায় একজন স্ট্রোকের রোগীকে চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। চিকিৎসার অভাবে রোগী মারা গেছেন বলেও দাবি করেন তাঁর স্বজনেরা। এ ঘটনা ২০২১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।

উদাহরণ আরও আছে। যশোরের একটি উপজেলায় একজন কৃষি কর্মকর্তাকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি অফিস থেকে

চার সাংবাদিককে বের করে দিয়েছিলেন বছর কয়েক আগে।

বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের নাম এসেছে ‘স্যার’ ডাকের জন্য কাতরদের তালিকায়। একটি দৈনিক পত্রিকার ময়মনসিংহের একটি উপজেলার এক প্রতিনিধি ফোন করেছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের এক নির্বাহী প্রকৌশলীকে। তাঁকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করায় ওই প্রকৌশলী ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আমাকে “স্যার” সম্বোধন করে কথা বলুন, আমি ডিসির সমমান। আমার সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন, আমি ডিসির সমমান পদমর্যাদায় আছি। আমি ২০তম বিসিএসে ক্যাডার হিসেবে যোগদান করার পর পঞ্চম গ্রেডে কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছি। আমাকে আগে “স্যার” বলে সম্বোধন করে, পরে কথা বলুন।’

কেমন করে ভিত গাড়ল ‘স্যার কালচার’

ব্রিটিশরা এ দেশে আমলাতন্ত্রের ভিত গাড়ার আগে এ দেশে প্রশাসন ছিল। তখন পদের নামেই সম্বোধন চলত। রাজা, কাজি, আমিন, তালুকদার, জায়গিরদারদের পদ বা কখনো কখনো বাদশার কাছ থেকে পাওয়া উপাধি বা পদবি দিয়েও সম্বোধন চলত। ব্রিটিশরা নিজের দেশে নাম বা পদ ধরে সম্বোধনের রেওয়াজ চালু রাখলেও উপনিবেশের বাসিন্দাদের প্রভু মানে ‘স্যার’ সম্বোধন শিখিয়েছেন। আইসিএস কর্মকর্তা অশোক মিত্র ছিলেন ভারতের প্রথম জনগণনা কমিশনার। সমাজবিজ্ঞানী, গবেষক, প্রাবন্ধিক, শিল্প ঐতিহাসিক ও শিল্প সমালোচক হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। তিনি বিলেতের প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে তাঁর সিনিয়র ‘ব্রিটিশ বস’ বা বড়কর্তাকে সালাম দিতে গিয়েছিলেন। অশোক মিত্র, স্যার না বলে তাঁর পদ ধরে সম্বোধন করেছিলেন। এ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অশোক মিত্র লিখেছেন, ‘খেয়াল করলাম, তাঁর ভ্রুটা একটু কুঁচকে গেল যেন। তিনি নেটিভ ভারতীয়র কাছে একজন ব্রিটিশ প্রভু হিসেবে ‘ইউর অনার’ বা সম্মানসূচক সম্বোধন আশা করেছিলেন।’

ব্রিটিশরা চলে গেছে, কিন্তু তাদের কুঁচকানো ভুরুটা রয়ে গেছে। কালে কালে ‘স্যারের’ শিকড়টা এমন গভীরে চলে গেছে যে এখন বড় কর্তার সব কথার উত্তর ‘স্যার’ শব্দ দিয়েই দেওয়া যায়। হ্যাঁ বাচক, না বাচক যা–ই হোক এক ‘স্যার’ দিয়ে সেরে ফেলা যায় কথোপকথন।

অনেক মনোবিজ্ঞানী মনে করেন, নড়বড়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলা মানুষের মধ্যে পোশাকি আড়ম্বরের প্রতি একটা ঝোঁক থাকে। যে শিক্ষক ভালো পড়াতে পারেন না, ক্লাসকে আকর্ষণীয় করতে পারেন না, তিনি মারপিট, বকাবকি, হুমকি দিয়ে ক্লাস শান্ত রাখার নিষ্ফল চেষ্টা করেন। কোন ছাত্র কতটা ঝুঁকে সালাম দিল, আর কে দিল না, সেটাই হয়ে ওঠে তাঁর প্রধান বিবেচ্য বিষয়। দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেল যেমন বলেছেন, ‘ক্ষমতার অপব্যবহারের মধ্যেই দুর্বল মানুষ ক্ষমতার স্বাদ পেতে চায়।’

উত্তরণের উপায় কী

এ প্রশ্নের সহজ কোনো উত্তর নেই। নতুন কিছু শেখানোর আগে ভোলাতে (ডি-লার্নিং) হবে অনেক কিছু। পাবনার একটি উপজেলার একজন ইউএনও নাকি বলেছেন, ‘আপনি জানেন না একজন ইউএনওকে “স্যার” বা “ম্যাডাম” বলতে হয়। আমাদের চাকরিতে নিয়মকানুন আছে। অবশ্যই আমাকে “স্যার” বা “ম্যাডাম” বলে সম্বোধন করতে হবে। অন্য কারোর সঙ্গে আমাকে বিবেচনা করা যাবে না।’ হয়তো তিনি সাময়িক উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে কথাটা বলেছেন। আবার হয়তো তিনি এটা বিশ্বাসও করেন। অনেকে মনে করেন, ‘স্যার’ শব্দে সরকারি কর্মকর্তাদের আত্মপ্রত্যয় বেড়ে যায়। আত্মপ্রত্যয় কি একটি শব্দের মধ্যে লুকিয়ে থাকে? ওটা জপ করলেই সেখান থেকে প্রত্যয় ভুরভুর করে বেরিয়ে আসবে?

সরকারি কর্মকর্তাদের বনিয়াদি প্রশিক্ষণের সময় এখন বেড়েছে। সেখানে স্বাধীন দেশের জনগণের সঙ্গে প্রজাতন্ত্রের কর্মীদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত, সেটা নিয়ে বিস্তারিত ও হাতে–কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত। বার্ষিক মূল্যায়নে স্থানীয় জনগণের একটা হিস্যা থাকা উচিত।

বিশেজ্ঞরা মনে করেন, প্রশাসনের ভেতরে ঊর্ধ্বতন ও অধস্তনদের মধ্যে প্রভু ও দাস মার্কা সম্পর্ক গড়ে উঠতে দেওয়া ঠিক নয়। অর্থাৎ প্রশাসনের ভেতরেই একে অপরের প্রতি আচরণবিধিতে একটা গুণগত পরিবর্তন আনা দরকার।

বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি আচরণ বিধিমালা আছে। প্রায় ৪০ বছর আগের এই আচরণবিধি অবশ্য ২০০২ সালে ও ২০১১ সালে দুই দফায় সংশোধিত হয়েছে। এখানে মোট ৩৪টি নির্দেশনা থাকলেও নাগরিকদের সঙ্গে আচরণ বিষয়ে আলাদা কোনো বিধি নেই।

অবশ্য ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালায় নাগরিকদের সঙ্গে যেকোনো অসদাচরণ শাস্তিযোগ্য হবে, এমনটি লেখা আছে। সেখানে অসদাচরণ বলতে বোঝানো হয়েছে, অসংগত আচরণ, চাকরি-শৃঙ্খলা হানিকর আচরণ কিংবা শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণকে। তবে এসবের বিস্তারিত আলোচনা সেখানে নেই।

ভুলে গেলে চলবে না সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সব সময়ে জনগণের সেবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য। তাই জনগণকে ‘স্যার’ সম্বোধনে বাধ্য করার বিষয়টি কতটা ন্যায্য, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।

● গওহার নঈম ওয়ারা গবেষক

nayeem5508@gmail.com