প্রথম আলোর প্রতিনিধিকে ছাত্রলীগের মারধর

‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে হামলায় আহত প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোশাররফ শাহকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আজ দুপুরে ছবিটি তোলা
ছবি: প্রথম আলো

প্রথম আলোর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোশাররফ শাহকে মারধর করেছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। মারধরের সময় তাঁকে ছাত্রলীগ নিয়ে সংবাদ না করার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোশাররফ।

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে তাঁকে মারধর করা হয়। মোশাররফ বলেন, ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রেজাউল হকের অনুসারীরা তাঁকে মারধর করেছেন।
ছাত্রলীগের উপপক্ষ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) নেতৃত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রেজাউল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। তিনি খোঁজ নিচ্ছেন।

মোশাররফ শাহ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, ভাঙচুর, প্রধান প্রকৌশলীকে মারধরের ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ ও বক্তব্য নেওয়ার জন্য তিনি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ছাত্রলীগের ১৫ থেকে ২০ কর্মী তাঁকে প্রথমে পেছন থেকে ধাক্কা দেন। এরপর ছাত্রলীগ নিয়ে কেন প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, তা জানতে চান। কয়েকজন তাঁর কপালে, মুখে কিলঘুষি দেন। তাঁর বুকে লাথি দেন। হাতেও আঘাত করেন।

মোশাররফ আরও বলেন, মারধরের সময় নেতা-কর্মীরা তাঁকে পরবর্তীকালে আর ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। তাঁরা বলেন, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।’

আহত অবস্থায় মোশাররফকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বুক ও হাতে আঘাত থাকার কারণে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, মোশাররফের কপালে চারটি সেলাই দিতে হয়েছে। তাঁর হাতেও আঘাত আছে। এক্স–রে করাতে হবে। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে  চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফি উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, হামলার বিষয়টি তাঁরা জানেন। প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে তাঁদের এ ব্যাপারে কথা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।