অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রমের ওপর নজর রাখবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্লুনি ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিসের উদ্যোগ ট্রায়াল ওয়াচ। গতকাল বুধবার ক্লুনি ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিসের এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশ এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করলেও ৪৩ বছর বয়সী পুরস্কারপ্রাপ্ত অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ফৌজদারি অভিযোগের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর দমন–পীড়ন বাড়তে থাকার মধ্যে তিনি এই ফৌজদারি অভিযোগের মুখে পড়েছেন।
এতে বলা হয়, কোভিড–১৯ মহামারি মোকাবিলায় সরকারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিবেদন করার জের হিসেবে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে এই মামলা হয়েছিল। ক্লুনি ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিসের উদ্যোগ ট্রায়াল ওয়াচ তাঁর বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রমের ওপর নজর রাখবে বলে আজ (গতকাল) ঘোষণা দিচ্ছে
সাংবাদিকসহ বিশ্বব্যাপী নিপীড়নের শিকার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলার বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ এবং যাঁরা অন্যায়ভাবে কারাবন্দী, তাঁদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করে থাকে ট্রায়াল ওয়াচ।
২০২১ সালের ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি কক্ষে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতন করা হয়। পরে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করা হয়।
রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধির দুটি ধারায় মামলা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৩ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পুলিশ বলেছিল, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সপক্ষে কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে চেয়েছিল তদন্ত সংস্থাটি।
এর প্রায় সাত মাস পর গত ২৩ জানুয়ারি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা শিব্বির আহমেদ ওসমানী। তাঁর আবেদন গ্রহণ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
এতে হয়রানির মধ্যে থাকা রোজিনা ইসলাম তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড ও পাসপোর্ট পাচ্ছেন না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করে ক্লুনি ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস।