বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন

দলবাজ-দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের স্থান আদালতে হবে না: সারজিস আলম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের স্থান আদালতে হবে না।

অন্যতম আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের যারা দোসর ছিল, তাদের দিয়ে আওয়ামী খুনি-সন্ত্রাসীদের বিচার করা সম্ভব নয়।’

আজ বুধবার আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট’ বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হাইকোর্ট ঘেরাও কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ। হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে দুপুর থেকে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

সারজিস আলম বলেন, ‘মামলার রায়ের জন্য কোটি টাকা লেনদেন হয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশে টাকার বিনিময়ে আসামি খালাস করা বন্ধ করুন। এসব বন্ধ না হলে যেখানেই অভিযোগ পাব, সেখানেই আমরা চলে যাব। দলবাজ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের কোনো স্থান আদালতে হবে না।’

ফ্যাসিস্টদের দোসররা নানা চেহারায় ফিরে আসছে বলে মন্তব্য করেন সারজিস আলম। বলেন, ‘যখনই এদের কোনো উৎপাত আমরা দেখব, রাজপথে নেমে তাদের প্রতিহত করব। আমাদের দল আলাদা হতে পারে, চিন্তা আলাদা হতে পারে, নির্বাচনে ভিন্ন ভিন্ন দলকে আমরা ভোট দিতে পারি। তবে ফ্যাসিস্টদের মোকাবিলায় আমরা সবাই এক।’

সারজিস আলম আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সরবরাহ করা অবৈধ অস্ত্র দিয়ে যে সংগঠনের সন্ত্রাসীরা আমাদের ভাইবোনদের ওপর গুলি চালিয়েছে, হত্যা করেছে, সেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের যারা দোসর ছিল, তাদের দ্বারা আওয়ামী খুনি ও সন্ত্রাসীদের বিচার করা সম্ভব নয়। তাঁরা যেসব বিচারপতির অপসারণ চান, তাদের নিয়ে বৈঠক হওয়ার খবর তাঁরা পেয়েছেন। যেহেতু বৈঠক চলছে, সে জন্য অনুষ্ঠান ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তাঁরা অপেক্ষা করবেন।’

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, যাঁরা ক্ষমতায় বসেছেন, বিভিন্ন পদে বসেছেন, তাঁরা ছাত্র-নাগরিকের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে বসেছেন। এ জন্য ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের কোনো চেষ্টা যেন তাঁরা না করেন।

আওয়ামী লীগের লোকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা (প্রচারণা) চালাচ্ছে। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ যে ক্ষত রেখে গেছে, তা সারতে সময় লাগবে। আওয়ামী লীগ সব জায়গায় দেশকে ‘মাইনাসে’ নিয়ে গেছে। সেখান থেকে আগে সমানে আসতে হবে। এরপর উন্নয়নের দিকে যেতে হবে।

ছাত্র-নাগরিকের অভ্যুত্থানের সৈনিকদের ঐক্য ভাঙার জন্য কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। বলেন, ‘আমাদের ঐক্য ভাঙার জন্য ফ্যাসিস্টরা একেক সময়ে একেক ধরনের টুলস নিয়ে আসবে। কখনো প্রাইভেট ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, কখনো ইংলিশ মিডিয়াম-মাদ্রাসা, কখনো হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের চেষ্টা তারা করছে। কিন্তু আমরা ঐক্য নষ্ট করব না। আমরা বাঁচতে হলে একসঙ্গে বাঁচব, একসঙ্গে লড়াই করব।’

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গণহত্যার জন্য আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের ক্ষমা চাইতে হবে। ছাত্র-জনতার খুনিদের বিচার করতে হবে। এরপর জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে তারা রাজনীতি করতে পারবেন কি না।