ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগ: ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে ক্লাসে ফিরলেন শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হয়রানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর জন্য ১০ দিন সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার সকালে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এই সময় বেঁধে দেন।

এক সপ্তাহ পর আজ শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরেছেন, তবে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু না হলে তাঁরা আবার ক্লাস বর্জন করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিজ খান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চান, আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে না নেয়; এই প্রক্রিয়ায় যদি কোনো অবহেলা, পক্ষপাতিত্ব, স্বচ্ছতার ঘাটতি দেখা যায় কিংবা কোনো মহল বিচারপ্রক্রিয়াকে কোনোভাবে প্রভাবিত করছে বলে মনে হয়, তাহলে তাঁরা আবার ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে ফিরতে বাধ্য হবেন।

বিভাগটির ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে প্রথমে নম্বর কম দেওয়া নিয়ে অভিযোগ তোলেন সদ্য স্নাতকোত্তর একটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বড় অংশ। এর মধ্যে ১০ ফেব্রুয়ারি ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন বিভাগের এক ছাত্রী। এতে তিনি যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন। অভিযোগের সঙ্গে কিছু তথ্যপ্রমাণও জমা দেন ছাত্রী।

সেদিন রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরদিন সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন দুপুরে ওই ছাত্রী একই অভিযোগ উপাচার্যের কাছে জমা দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে স্মারকলিপিও দেন।

অবশ্য ওই অধ্যাপক শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, বিভাগের পরবর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার আগে ষড়যন্ত্র ও ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিন ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওই অধ্যাপককে তিন মাসের ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের চিঠিতে বলা হয়, অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চলতি মাসের শেষ দিকে সিন্ডিকেটের এই সভা হওয়ার কথা রয়েছে।

এরপর শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের জন্য একাডেমিক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়বে না, এমন লিখিত নিরাপত্তার আশ্বাস চান বিভাগের চেয়ারম্যান আবুল মনসুর আহাম্মদের কাছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিভাগের একাডেমিক কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে লিখিত আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান। এরপর শিক্ষার্থীরা আজ থেকে রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিলেন।