রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদচ্যুতি ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে সময়সীমা বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন৷ এর মধ্যে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই রাষ্ট্রপতির পদচ্যুতি ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও ফ্যাসিবাদের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর (রাষ্ট্রপতির ডাকনাম) পদত্যাগের দাবিতে বিপ্লবী ছাত্র–জনতার গণজমায়েত’ কর্মসূচির আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেখানে প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করেন অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ৷
কর্মসূচির সমাপনী বক্তব্যে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যে শহীদ মিনার থেকে আমরা এক দফা ঘোষণা দিয়েছিলাম, সেখান থেকে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করতে চাইছি। আমাদের প্রথম দফা, যে সংবিধানের মধ্য দিয়ে চুপ্পু বলবৎ রয়েছে, এই মুজিববাদী বাহাত্তরের সংবিধানকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। সেই সংবিধানের জায়গায় ২০২৪-এর গণ–অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ ঘোষিত অন্য চার দফা দাবি হচ্ছে এই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলার মাটি থেকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। ফ্যাসিবাদের সংবিধানের দোসর রাষ্ট্রপতি চুপ্পুকে (মো. সাহাবুদ্দিন) এই সপ্তাহের মধ্যে পদচ্যুত করতে হবে। অভ্যুত্থান ও জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের আলোকে ২০২৪-পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে প্রক্লেমেশন অব রিপাবলিক ঘোষণা করতে হবে এবং এর ভিত্তিতে দেশে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দলের মতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে। এই তিন নির্বাচনে যাঁরা সংসদ সদস্য ছিলেন, তাঁদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং তাঁরা যেন ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে কোনোভাবেই প্রাসঙ্গিক না হতে পারেন ও নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সে জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।'
# অভ্যুত্থান ও জুলাই বিপ্লবের চেতনার আলোকে প্রক্লেমেশন অব রিপাবলিক ঘোষণা করতে হবে।# ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করতে হবে।# এই তিন নির্বাচনের সংসদ সদস্যদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং তাঁরা যেন ভবিষ্যতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সে জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
হাসনাত বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার ও ছাত্রলীগ ’২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে প্রাসঙ্গিক হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে ১৭ জুলাই। যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসী-জঙ্গিরা নগ্নভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে। সারা দেশে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। তখনই সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, এই জঙ্গি সংগঠন ও এই সংগঠনের ‘মাদার’ শেখ হাসিনার ঠাঁই এই বাংলায় হবে না।
সমন্বয়ক হাসনাত আরও বলেন, ‘আমরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় রক্ত দিয়ে সেটি নিশ্চিত করেছি। এই সপ্তাহের মধ্যে আমরা নিশ্চিত করতে চাই, ছাত্রলীগ-যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদী চেতনার সব সাংস্কৃতিক সংগঠন, মিডিয়া সংগঠন, মুজিববাদী মিডিয়া ও সংস্কৃতি, মুজিববাদী সংবিধান, মুজিববাদী জীবনাচারণ এই বাংলার মাটি থেকে স্থায়ীভাবে উৎখাত হয়ে যাবে।’
আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মাদার অব টেরর’ খুনি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে পুনর্বাসিত করার স্বপ্ন ভুলে গিয়ে নিজেরা অবিলম্বে বিচারের আওতায় চলে আসুন। তাঁকে আমরা বাংলাদেশে নিয়ে আসব। তবে সেটা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানোর জন্য।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের বিপ্লব শেষ হয়ে যায়নি। ৫ আগস্ট আমরা মাফিয়া শেখ হাসিনাকে উৎখাত করেছি। কিন্তু এখনো আমরা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে পারিনি। অনেক রাজনৈতিক দল গত ১৬ বছর ধরে নির্যাতিত-নিগৃহীত ও নিপীড়িত হয়েছে। আমরা বিএনপি, জামায়াতকে নিগৃহীত-নির্যাতিত হতে দেখেছি। আমার ছাত্রদলের ভাইয়েরা ক্যাম্পাসে আসতে পারেননি। তাঁদের পশুর মতো রাস্তায় ফেলে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পেটাত। শিবিরকে হত্যা করা জায়েজ করে ফেলা হয়েছিল।’
হাসনাত আরও বলেন, ‘সারা দেশে ও ক্যাম্পাস ক্রিয়াশীল গণতান্ত্রিক ধারার রাজনৈতিক দলগুলো আছে—বিএনপি, জামায়াত, ডানপন্থী, বামপন্থী, উভয়পন্থী—যে মতাদর্শেরই হোক না কেন, যাঁরা বাংলাদেশের প্রশ্নে আপসহীন, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য যাঁরা রাজনীতি করেন, যত দিন না তাঁদের সুস্থ ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারছি, তত দিন পর্যন্ত আমাদের বিপ্লব শেষ হয়ে হবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘মুজিববাদী আওয়ামী শক্তিকে বাংলাদেশ থেকে স্থায়ীভাবে উৎখাত করার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নিজেদের দলীয় স্বার্থে আমরা পৃথক হয়ে গেলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তি আমাদের ওপর আবার জেঁকে বসবে। সে জন্য গণতন্ত্রকামী ও বাংলাদেশের প্রশ্নে আপসহীন রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা আহ্বান জানাব, মুজিববাদীদের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের একটাই অবস্থান—আমরা মজলুম, তারা জালিম। জালিমের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান চলবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ দফা বাস্তবায়ন না হলে আমরা রাস্তায় নেমে আসব। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আপনারা সরকার হয়েছেন। কিন্তু পেছনে মুজিবের ছবি না লাগিয়ে ৫ আগস্টের গণভবন, বঙ্গভবন ও সংসদের ছবিটি প্রত্যেকের কক্ষের সামনে লাগিয়ে রাখবেন। মনে রাখবেন, যখনই সরকার জনমুখী না হয়ে ক্ষমতামুখী হয়, তাদের অবস্থা ঠিক ওই সংসদের মতো হবে।’
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর খুনি হাসিনা ও তাঁর কোনো দোসর গর্ত থেকে বের হওয়ার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করলে ছাত্র-জনতা আবার ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে। রাষ্ট্রপতি চুপ্পু ৫ আগস্টে পুরো জাতির সামনে বলেছিলেন, খুনি হাসিনা তাঁর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এখন তিনি বলছেন, তাঁর কাছে পদত্যাগপত্র নেই।
সারজিস বলেন, ‘চুপ্পুসহ ফ্যাসিবাদের সব দোসরকে একটি কথা বলে দিতে চাই, ফ্যাসিস্টদের উৎপাত দেখা গেলে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিরোধ করবে। প্রয়োজন হলে আবার আমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত, এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত। কিন্তু ফ্যাসিস্টের দোসর সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে আমরা আমৃত্যু প্রস্তুত থাকব।’
সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ফ্যাসিবাদের মূল হচ্ছে মুজিববাদ। জুলাই অভ্যুত্থানে প্রথম হামলা করেছিল সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার শুরুটাও হয় এই ছাত্রলীগ দিয়ে। তাই এই সন্ত্রাসী মুজিববাদী ছাত্রসংগঠনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। চুপ্পু সাহেব এখনো স্বপদে বহাল আছেন। ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ঘোষিত এক দফার প্রথম অঙ্গীকার ছিল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ। এই ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিলোপের অংশ হিসেবে ফ্যাসিবাদের দোসর চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে সরাতে হবে।'
সমন্বয়ক লুৎফর রহমান রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে বলেন, ‘ন্যূনতম সম্মান থাকলে পদত্যাগ করে রাষ্ট্রপতি পদকে মুক্ত করুন। চুপ্পুর পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। অবিলম্বে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
সমন্বয়ক আশরেফা খাতুন বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, কিন্তু তাঁর দোসরদের রেখে গেছেন। সন্ত্রাসী ছাত্রলীগকে এখনো নিষিদ্ধ করা হয়নি। আওয়ামী লীগের দোসর চুপ্পু দেশে বসে হাসিনার দালালি করে যাচ্ছেন। ছাত্র-জনতা হাসিনাকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়েছে। তিনি পালিয়েছেন। তাঁর পদত্যাগপত্র গোনার সময় আমাদের নেই।’ তিনি জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সমন্বয়ক রিফাত রশীদ বলেন, ‘এই সপ্তাহের মধ্যে সন্ত্রাসী, জঙ্গি সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হলে জনগণ নিজেদের ম্যান্ডেট দিয়ে তাদের নিষিদ্ধ করে দেবে। পতিত ফ্যাসিবাদের অনেক দোসর ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিল, যার পূর্ণাঙ্গ তালিকা আমরা পাইনি। সেনাপ্রধান সেই ৬২৬ জনের তালিকা এই সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ না করলে ফলাফল ভালো হবে না। তাদের নাম অবিলম্বে প্রকাশ করুন, তাদের মধ্যে কারা আটক হয়েছে, তার তালিকা দিন।’
ছাত্রলীগ নামের সন্ত্রাসী সংগঠন আবার মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং খুনিরা আবার ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। এই সপ্তাহের মধ্যে ছাত্রলীগকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এটা লাখ লাখ ছাত্র-জনতার আলটিমেটাম।
সাংবিধানিক পদে থেকে কি তামাশা করছেন—রাষ্ট্রপতির প্রতি এমন প্রশ্ন তুলে আবদুল হান্নান বলেন, শেখ হাসিনার মতো চুপ্পুকেও পালাতে হবে।
নাগরিক কমিটির আলটিমেটাম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণজমায়েত কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন। এতে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বক্তব্য দেন।
নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে দাবি জানাচ্ছি—প্রথমত, আমরা খুনি হাসিনার ফ্যাসিস্ট রেজিমের কোনো অংশ এই দেশে দেখতে চাই না। বাংলাদেশে ক্ষমতার অংশীদার হয়ে যারা ছাত্র-জনতার ওপর গুণ্ডাগিরি চালিয়েছে, সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সেই ক্ষমতার অংশ। আমরা অবিলম্বে খুনি হাসিনার এই দোসরের পদত্যাগ দাবি করছি। দ্বিতীয়ত, আমরা বাংলাদেশে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি। গত ১৫ বছরে আমাদের যেসব ভাইয়ের গুম-খুন করা হয়েছে, তাঁদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে গত ৫৩ বছরে রাষ্ট্রের যেসব বাহিনী গুম-খুনের নেতৃত্ব দিয়েছে, আমরা তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আহ্বান ও দাবি জানাচ্ছি। আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি৷’
নাসীরুদ্দীন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘অবিলম্বে এসব দাবি মানা না হলে আমরা ছাত্র-নাগরিকদের অভ্যুত্থানকে চূড়ান্ত বিপ্লবের দিকে নিয়ে যাব। সেদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অবিলম্বে সব সমস্যার মূল কারিগর ফ্যাসিস্ট বাকশালি সংবিধান বাতিল করে জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে একটি প্রক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্স ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। এসব দাবি এই মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে আমরা জাতীয় নাগরিক কমিটি দেশের সব দল, নাগরিক অংশীজনদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।’
শহীদ মিনারে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।