সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে হামলা চালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। এতে তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন, ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন, রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ গালিব ও গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম। তাদের সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ছাত্রী হলের দিকে গেলে দুই থেকে তিন শ ছাত্রী এতে যোগ দেন। পরে মিছিলটি ছাত্রীদের আবাসিক হল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে আসে। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘চাইতে গেলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘তুমি কে আমি কে/ রাজাকার, রাজাকার’, ‘মেধা না কোটা/ মেধা মেধা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় বিপরীত দিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমানের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা–কর্মী শাহপরাণ হল থেকে একটি মিছিল নিয়ে আসেন। তাঁরা স্লোগান দেন ‘আমার সোনার বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’।
একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়। ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা মানবপ্রাচীর তৈরি করে আন্দোলনকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন।
হামলায় আহত শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ আল গালিব অভিযোগ করেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম। এর মধ্যে আমরা খবর পাই, মিছিলে আসতে আগ্রহী হলের কিছু ভাইকে ছাত্রলীগ আসতে বাধা দিচ্ছে। তাই আবাসিক ছাত্র হল অভিমুখে গেলে পথিমধ্যে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা আমাদের মিছিলে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাঁরা হামলা করে।’
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। সবার কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে, তা দেখলেই বুঝা যাবে। বরং আমরা সড়কের পাশে গিয়ে তাঁদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। কেউ আহত হয়েছে কিনা, শিক্ষার্থীরা এমন কোনো বিষয়ে জানাননি। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত।’