নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারসহ ৮ দফা দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে ছাত্রদল। আজ সোমবার দুপুরে ছাত্রদলের একটি প্রতিনিধিদল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে এই স্মারকলিপি দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে স্মারকলিপির বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্যসচিব সাহারাজ উদ্দিন। স্মারকলিপি পড়ে শোনান জাহিদ হাসান। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য সাব্বির হোসাইন ওরফে শান্তসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নিজেকে সভাপতির পদপ্রত্যাশী পরিচয় দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ হাসান বলেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বর্তমান প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে ক্যাম্পাসের পরিবেশে কিছু নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে অপরাজনীতি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। খেলাধুলা, ক্লাব ও মানবিক কার্যক্রমের আড়ালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পুনর্বাসনের মতো ঘটনাগুলো গভীর উদ্বেগের জন্ম দিচ্ছে। এ পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক চর্চা ও ছাত্ররাজনীতি শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুষ্ঠু ছাত্ররাজনীতি তরুণদের সামাজিক দায়বদ্ধতা, মানবিকতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি গড়ে তোলে। নিষিদ্ধের পরিবর্তে একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু পরিবেশে সংস্কারমূলক, ইতিবাচক এবং ইনক্লুসিভ ছাত্ররাজনীতি পরিচালিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ আরও উন্নত হবে।
স্মারকলিপিতে আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ছাত্ররাজনীতি পুনর্বহাল, গণতান্ত্রিক রিজেন্ট বোর্ড গঠন, অবৈধ নিয়োগ মুক্ত ক্যাম্পাস, নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও সেবার উন্নয়ন, মেয়েদের হল রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা, প্রতিটি হলে ভর্তুকি দিয়ে ডাইনিং চালু করা, ক্যাম্পাসের শান্তিশৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য রক্ষা করা।
গত ৯ আগস্ট নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনীতি ও রাজনৈতিক প্রচারণা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রিজেন্ট বোর্ড। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ফোরাম—রিজেন্ট বোর্ড। বোর্ডের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত এটি।