জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে হামলা চালানো হয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে হামলা চালানো হয়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বিকৃতি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ম্যুরালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি বিকৃত করা হয়েছে এবং আংশিক অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার দায় কোনো পক্ষই নেয়নি। তবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, দুষ্কৃতকারীরা এ কাজ করেছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পাশেই গণিত বিভাগের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটির অবস্থান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্র–জনতার বিক্ষোভের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কিছু দুষ্কৃতকারী এ কাজ করেছে। তাদের কারও পরিচয় জানা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় এ ঘটনার নিন্দা জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত সংগঠনের বিপরীত ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এক নেতা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টিতে আমরাও কষ্ট পেয়েছি। ম্যুরাল ও প্রতিকৃতির সামনে এসে অনেকে থমকে যাচ্ছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সরকারদলীয় কারও সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ছিল না। এরপরও যারা ম্যুরাল ভেঙেছে, তারা দুষ্কৃতকারী, প্রতিহিংসা ছড়াতে চায়। আমরা এগুলো পছন্দ করছি না।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলার সুযোগ নেই। কেউ বিশৃঙ্খলা করে থাকলে সে দুষ্কৃতিকারী। শিক্ষার্থীদের বলেছি, কেউ বিশৃঙ্খলা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে।’

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইচ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনা শোনার পরই আমার সহকর্মীদের নিয়ে ভাঙচুর থামাই। আমরা এসব সমর্থন করি না। যারা বিশৃঙ্খলা করে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশের পক্ষে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মাশরিক হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধাদেরসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্যের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের বাসাবাড়িতে যে হামলা চালানো হচ্ছে, তা দীর্ঘদিনের সম্প্রীতি ও দেশের স্বাধীনতার বিরোধী। এ সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হবে, এটা স্বাভাবিক। অতীতেও হয়েছে। কিন্তু সাংবিধানিকভাবে বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান নিশ্চয়ই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। তরুণ প্রজন্মের বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্য রক্ষা ও সংস্কারের উদ্যোগ আমাকে আশাবাদী করে। আশা করি, আমাদের শিক্ষার্থীরা বিষয়গুলোয় গুরুত্ব দেবে।’