প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বানভাসি মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। গতকাল বিকেলে ফেনী সদরের তুলাবাড়িয়া এলাকায়
প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বানভাসি মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। গতকাল বিকেলে ফেনী সদরের তুলাবাড়িয়া এলাকায়

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগ

ত্রাণ পেল আরও ৬০০ পরিবার

খাবার পেয়ে খুশি। তবে বেশি খুশি হয়েছেন পানি পেয়ে। যদি থাকে তাহলে আরও পানি চাইলেন বৃদ্ধ সুভাষ চন্দ্র দাস। ফেনী সদর উপজেলার ছেওরিয়া গ্রামের এই বাসিন্দার হাতে গতকাল মঙ্গলবার ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে গতকাল ফেনী সদর ও সোনাগাজী উপজেলার ৫০০ বন্যার্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

সুভাষ চন্দ্র জানালেন, ছয় দিন ধরে পরিবার নিয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। নৌকা ছাড়া চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ত্রাণ পাওয়ায় খাবারের চিন্তা কিছুটা হলেও দূর হলো।

ছেওরিয়ার সড়কগুলোতে এখনো কোথাও হাঁটু, কোথাও বুকসমান পানি। বাসাবাড়ির নিচতলা এখনো পানিতে ডুবে আছে। নৌকা নিয়ে গ্রামটির বাসিন্দাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা।

গতকাল বন্ধুসভার সদস্যরা ফেনী সদর উপজেলার কালিহাতী ছাড়াও সোনাগাজীর বকুলতলা, মির্জাপুর, সাতবাড়িয়া, জিৎপুর, ভাদাদিয়াসহ প্রায় ১০টি এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।

ভাদাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, ‘পানি নেমে গেলেও আমরা এখনো মানবেতর জীবন যাপন করছি। এর আগেও আমরা ত্রাণ পেয়েছি, তবে তা পরিমাণে খুবই কম।’

ফেনী ছাড়াও গতকাল নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন বন্ধুসভার সদস্যরা। প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে উপজেলার বারগাঁও ও গোপালপুর ইউনিয়নের ১০০ বন্যার্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেন তাঁরা।

ত্রাণবাহী নৌকা দেখে এগিয়ে এলেন বারগাঁও ইউনিয়নের রাজীবপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রহিম। ত্রাণের প্যাকেট হাতে পেয়ে প্রবীণ এই ব্যক্তি জানালেন, সাত-আট দিন ধরে পরিবারসহ বাড়িতে পানিবন্দী হয়ে আছেন। ঘরে খাবার নেই। কাজেও যেতে পারছেন না। তাই সকালে বেরিয়েছিলেন কাজ আর খাবারের খোঁজে। যে ত্রাণ পেলেন তাতে অন্তত দুই-তিন দিন স্ত্রী–সন্তান নিয়ে দুবেলা খেতে পারবেন।

আবদুর রহিমের মতো নৌকা দেখে দূর থেকে এগিয়ে আসেন রাজীবপুর গ্রামের আরেক বাসিন্দা জয়নাল আবদিন (৫০)। তিনি বলেন, এলাকার সব মানুষ পানবন্দী অবস্থায় রয়েছে কয়েক দিন ধরে। ঘর থেকে কেউ বের হতে পারে না। দুই দিন ধরে শুকনা খাবার খেয়ে আছে। একই গ্রামের নুরুন নাহার (৪৫) বললেন, ‘এমন অবস্থায় ত্রাণ পেয়ে স্বস্তি ফিরে পেলাম। আল্লাহ আপনাদের ভালো করবে।’

বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসুন

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল। হিসাব নম্বর: ২০৭২০০০০১১১৯৪, ঢাকা ব্যাংক পিএলসি, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।