বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূরকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া এলাকায় হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্ত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মামলার তদন্ত ও ছায়া তদন্তকারী সূত্রগুলো বলছে, কী কারণে, কারা তাঁকে হত্যা করেছে, সেই ক্লু (সূত্র) পাওয়া যায়নি। তবে এই হত্যার সঙ্গে চনপাড়াকেন্দ্রিক অপরাধী চক্র জড়িত থাকতে পারে।
৪ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রামপুরা থানায় তাঁর বাবার করা মামলায় আয়াতুল্লাহ বুশরা নামের এক বন্ধুকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
মামলা তদন্তের অগ্রগতি প্রসঙ্গে গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা পারিপার্শ্বিকতা, বিভিন্ন বিষয় বিচার–বিশ্লেষণ করছি। আমাদের দল সব বিষয়, তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করে বিচার–বিশ্লেষণ করছে।’
ফারদিন হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চনপাড়াকেন্দ্রিক অপরাধী চক্রের কয়েকজনকে ধরতে ঢাকা ও বরিশালে অভিযান চালিয়েছে তদন্ত–সংশ্লিষ্ট একাধিক সংস্থা। চনপাড়ার মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত একাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে র্যাব। একটি সূত্র বলছে, বরিশালের বানারীপাড়া এলাকা থেকে রায়হান নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে আটকের বিষয়ে র্যাবের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজন বলছেন, চনপাড়ায় বৃহস্পতিবার র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো. শাহীন নামের (সিটি শাহীন নামে পরিচিত) যে ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, তাঁর সঙ্গে রায়হানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। রায়হান ওই এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ফারদিনের গতিবিধি ও মুঠোফোনের অবস্থান পর্যালোচনা করে মনে হচ্ছে চনপাড়া বাজার এলাকায় নিখোঁজের দিন দিবাগত ভোররাতে কোনো ঘটনা ঘটেছিল। তবে প্রকৃত ঘটনা এখনো স্পষ্ট নয়।
ফারদিন নূরের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা চেয়ে গতকাল বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারসংলগ্ন সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন বুয়েটের পাঁচ শিক্ষার্থী। বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ছাত্র তাহমিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা রাখি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঠিক তদন্ত করবে।’