ফেনীসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ১১টি জেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ফারুক-ই-আজম বলেন, এ বন্যায় ৯ লাখ ৪২ হাজার ৮২১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৭৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৬৮ জন। চলতি বছর ২০ আগস্ট আকস্মিক বন্যায় ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি ৬৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫২২ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে জানিয়ে ফারুক-ই-আজম বলেন, ইতিমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এ জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা কমিটিও গঠিত হবে। কমিটির সদস্যরা পুরো পুনর্বাসন কর্মসূচি তদারক করবেন।
দুর্যোগ উপদেষ্টা জানান, বন্যায় ২৩ কোটি ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৭৪০ টাকার ফসল সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭১৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৬১০ টাকার ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পাকা ঘর, আধা পাকা ঘর ও কাঁচা বাড়ির সংখ্যা ২৮ হাজার ৩৮৬টি। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৯৭টি ঘর।
বন্যাদুর্গত এলাকার কৃষকেরা তাঁদের ক্ষুদ্রঋণের কিস্তির টাকা আপাতত না নেওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না জানতে চাইলে ফারুক-ই-আজম বলেন, হ্যাঁ, এটা করা হয়েছে।
দুর্যোগ উপদেষ্টা আরও বলেন, আজকের সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে। পরে সবার মতামতের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়টি বিবেচনা করে তিন মাসের জন্য কিস্তির টাকা স্থগিত করা হয়েছে। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত কৃষকদের কিস্তির টাকা দিতে হবে না।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কপথের বিষয়ে ফারুক-ই-আজম বলেন, ২ হাজার ২৩৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক সম্পূর্ণ এবং ৩ হাজার ৯৮৪ কিলোমিটার সড়ক আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপর দিকে ইট-খোয়া দিয়ে নির্মিত ২৯৯ কিলোমিটার সম্পূর্ণ এবং ৯৪৯ কিলোমিটার আংশিক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার ১৫২ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক সূম্পর্ণ এবং ৮ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বন্যাকবলিত ১১ জেলায় আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা। আমরা সেটা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে বরাদ্দ করেছি। প্রাথমিকের শিক্ষা কার্যক্রম এক মাসের মধ্যে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।’