শ্রম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভা। গতকাল মঙ্গলবার শ্রম ভবনে
শ্রম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভা। গতকাল মঙ্গলবার শ্রম ভবনে

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে মানুষের চাওয়ার প্রতিফলন ঘটবে: কমিশনপ্রধান

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেছেন, তাঁরা ঠিক সময়ের মধ্যেই সুপারিশ প্রণয়ন করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন। আর কমিশন যে সংস্কার প্রতিবেদন দেবে, তাতে মানুষের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন অবশ্যই ঘটবে।

শ্রম সংস্কার কমিশনের সঙ্গে শ্রমিক অধিকার, মানবাধিকার ও নারী অধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরের শ্রম ভবনে এই সভা হয়। শ্রম সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিনিধিদের উদ্দেশে কমিশনপ্রধান বলেন, মাঠপর্যায়ের শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরার জন্যই এই সভা করা। সবার মতামত নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সহযোগী সংগঠনের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই তাঁরা বিশ্বাস করেন, তাঁরা সঠিক সময়ের মধ্যেই সুপারিশ প্রণয়ন করতে পারবেন।

সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ আরও বলেন, ‘আমাদের কমিশনের সংস্কার প্রতিবেদনে মানুষের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন অবশ্যই ঘটবে।’

সভায় উপস্থিতি প্রতিনিধিদের লিখিত মতামত ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান কমিশনপ্রধান।

সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন মাহফুজুল হক, শাকিল আখতার চৌধুরী, তাসলিমা আখতার, এ কে এম নাসিম, চৌধুরী আশিকুল আলম, রাজেকুজ্জামান রতন, অনন্য রায়হান, আরিফুল ইসলাম।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নারী গ্রন্থ প্রবর্তনার সীমা দাস শিমু, নারী সংহতির রেবেকা নীলা, ডেমোক্রেসি ওয়াচের সানজিদা লিপি, বিলসের কোহিনূর মাহমুদ, নাজমা আক্তার প্রমুখ। সভায় বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা তাঁদের সুপারিশ মৌখিকভাবে জানান। এর প্রয়োজনীয়তা তাঁরা বর্ণনা করেন।

বিভিন্ন সুপারিশের মধ্যে নারীর মাতৃত্বকালীন ছুটি, কর্মজীবী নারী শ্রমিকের জন্য পর্যাপ্ত দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডে-কেয়ার), যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ, শ্রমিকের ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা, পেশাগত স্বাস্থ্যনিরাপত্তা, শ্রমিকের স্বাস্থ্যনিরাপত্তা, যৌনকর্মীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের ডেটাবেজ তৈরির বিষয় আছে।

বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আইন থাকা সত্ত্বেও তার বাস্তবায়নের অভাব আছে।

রাজেকুজ্জামান রতন বর্তমান শ্রম আইনের প্রবর্তন ও সংশোধনের ইতিহাসের কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সুপারিশ অনেক আসতেই পারে, তবে তার বাস্তবায়ন নির্ভর করবে আমাদের আন্দোলনের জোরের ওপর।’

ট্রেড ইউনিয়ন কর্মী কোহিনূর মাহমুদ বলেন, সরকার শ্রম আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। কমিশনের সুপারিশ যেন শুধু কাগজকলমেই না থাকে, শ্রম আইনে যেন এই সুপারিশের প্রতিফলন থাকে। সবাই এই সুপারিশের বাস্তবায়ন দেখতে চায়। এই সুপারিশ বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব সরকারের।