অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় চাঁদপুরের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম খানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান আজ বুধবার এ আদেশ দেন। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সেলিম খান চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। আট বছর ধরে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলেছেন তিনি। এ ছাড়া প্রস্তাবিত চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে কারসাজি করে সরকারের কয়েক শ কোটি টাকা লোপাটের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। এসব বিষয়ে প্রথম আলোয় সংবাদ প্রকাশের পর সেলিম খানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি করার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন দুদকের কর্মকর্তারা।
গত ১ আগস্ট সেলিম খানের বিরুদ্ধে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। মামলায় বলা হয়, সেলিম অবৈধ উপায়ে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ তাঁর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তিনি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। সেলিম যে সম্পদের বিবরণী দাখিল করেছেন, তা যাচাই-বাছাই করে অসংগতি পাওয়া গেছে।
ওই মামলায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট সেলিম খানকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। এ সময়ের মধ্যে তাঁকে ঢাকার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ২০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেন। একই সঙ্গে আসামি সেলিম খানকে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করার আদেশ দেন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর সেলিম খান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আজ (১২ অক্টোবর) আবার জামিনের পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছিলেন। দুপুরে সেলিম খান আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে জামিনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী শাহিনূর ইসলাম আদালতে বক্তব্য তুলে ধরেন। অন্যদিকে, দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান জামিনের বিরোধিতা করে বক্তব্য তুলে ধরেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আসামি সেলিম খানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।