হাইকোর্ট ভবন
হাইকোর্ট ভবন

ট্রান্সকমের ৩ শীর্ষ কর্তাকে নির্বিঘ্নে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে নির্দেশ

ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ তিন কর্তা যাতে নির্বিঘ্নে দেশে ফিরে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এই আদেশ দেন।  

ট্রান্সকম গ্রুপের তিন শীর্ষ কর্তা হলেন গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমান ও হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারেফ আয়াত হোসেন।

হাইকোর্টের এক আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ওই আদেশ সংশোধন করে গতকাল চেম্বার আদালত এই আদেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদনটি করেন ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ হক। আর সিমিন রহমান হলেন লতিফুর রহমানের বড় মেয়ে।

আইনজীবীদের তথ্যমতে, ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান, সিইও সিমিন রহমান ও হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারেফ আয়াত হোসেন দেশের বাইরে রয়েছেন। পৃথক মামলা থাকায় তাঁরা যাতে দেশে ফিরে কোনো ধরনের বাধা ছাড়া আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন, সে বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে তাঁদের পক্ষে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বুধবার একটি দ্বৈত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ এই তিন কর্তা যাতে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া নির্বিঘ্নে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতের আত্মসমর্পণ করতে পারেন; সে বিষয়ে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এই আদেশ স্থগিত চেয়ে শাযরেহ হক আপিল বিভাগে আবেদন করেন, যা গতকাল চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। শাযরেহ হকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তানজিব উল আলম ও মুস্তাফিজুর রহমান খান। অন্যদিকে ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ তিন কর্তার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, নুরুল ইসলাম সুজন, মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ, শাহ মঞ্জুরুল হক; আইনজীবী মুন্সি মনিরুজ্জামান ও আবদুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

ট্রান্সকম গ্রুপের শীর্ষ তিন কর্তার বিরুদ্ধে যখন মামলাগুলো হয়, তার আগে থেকেই তাঁরা দেশের বাইরে রয়েছেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ জন্য আইন মান্যকারী নাগরিক হিসেবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে ওই রিটটি করা হয়েছিল। হাইকোর্ট ট্রান্সকম গ্রুপের এই তিনজন যাতে কোনো ধরনের হয়রানি ও গ্রেপ্তার ছাড়া নির্বিঘ্নে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন, সে বিষয়ে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশ দেন। এই আদেশ গতকাল সংশোধন করে দিয়েছেন চেম্বার আদালত। এই তিনজন যাতে দেশে ফেরার পর নির্বিঘ্নে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন চেম্বার আদালত।

এর আগে শাযরেহ হক বাদী হয়ে গুলশান থানায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি তিনটি মামলা করেন। এসব মামলায় কোম্পানির শেয়ার ও অর্থসম্পদ নিয়ে প্রতারণামূলক বিশ্বাস ভঙ্গ এবং জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। তিন মামলায় মোট আটজনকে আসামি করা হয়েছে।