চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

রাত ১০টার পর ছাত্রী হেনস্তা করা বৈধ কি না, জানতে চান শিক্ষার্থীরা

নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা
ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের নিরাপত্তার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করছেন।

বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চান, রাত ১০টার পর ছাত্রীদের হেনস্তা করা বৈধ কি না। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নারী, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা কীভাবে অনিরাপদ থাকতে পারে, তা জানতে চান তাঁরা৷

তিন দিন আগে ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের রাতে হলে ফেরার সময়সীমা বেঁধে দেয়। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে ক্ষোভ দেখা দেয়। দিনে বিভিন্ন কর্মসূচিতে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানো হয়। রাতে প্রীতিলতা হলের একদল ছাত্রী এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি নিয়ে উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন।

গতকাল রাত পৌনে ১০টার দিকে ৩০ থেকে ৩৫ জন ছাত্রী উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যাত্রা করলে প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা এসে তাঁদের পথ আটকান। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ ছাত্রীরা ওই হলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা অবিলম্বে প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করেন। পরে হল থেকে বেরিয়ে অন্য ছাত্রীরা ওই বিক্ষোভে যোগ দেন। পরে ছাত্রীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে ছাত্রীদের হল থেকে আরও তিনটি হল থেকে বের হয়ে আসেন আরও শতাধিক শিক্ষার্থীরা। ছাত্ররাও এ বিক্ষোভে যোগ দেন। পরে রাত সাড়ে ১২টায় আগামী চার কার্য দিবসের মধ্যে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তি দিতে না পারলে প্রক্টরিয়াল বডিসহ পদত্যাগ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান। এ আশ্বাসে অবস্থানের তিন ঘণ্টা পর হলে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যান।

গত রোববার রাত সাড়ে নয়টায় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। নিপীড়নের শিকার ছাত্রীর ভাষ্যমতে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পোশাক ও কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছে, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। পরে মুঠোফোন ও মানিব্যাগ রেখে দুজনকে ছেড়ে দেন ওই তরুণেরা।

গতকাল বুধবার বিকেল তিনটায় হাটহাজারী থানায় নিপীড়নের শিকার ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ১০ ধারায় এই মামলায় অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। ।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, তাঁরা আগে থেকেই বিষয়টি নজরে রেখেছিলেন। তাঁরা তদন্ত শুরু করেছেন।