গত বছর সারা দেশে ২৭ হাজার অগ্নিকাণ্ড

আগুন
প্রতীকী ছবি

সারা দেশে গত বছর ২৭ হাজার ৬২৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই হিসাবে দৈনিক গড়ে ৭৭টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুনে নিহত হয়েছেন ১০২ জন ও আহত হয়েছেন ২৮১ জন। এতে সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ৭৯২ কোটি ৩৬ লাখ ৮২ হাজার ১৪ টাকা। রোববার ফায়ার সার্ভিস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আগুন নেভানোর সময় ফায়ার সার্ভিসে ৪৮ কর্মী আহত হয়েছেন। আর অগ্নিনির্বাপণে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন একজন কর্মী। আগুনে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। সারা দেশে আহত ২৮১ জনের মধ্যে পুরুষ ২২১ ও নারী ৬০ জন এবং নিহত ১০২ জনের মধ্যে ৭৩ জন পুরুষ ও ২৯ জন নারী।

বৈদ্যুতিক গোলযোগ, বিড়ি–সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা, চুলা ও গ্যাসের লাইন থেকে আগুনের ঘটনা বেশি ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে বৈদ্যুতিক গোলযোগে ৯ হাজার ৮১৩টি, বিড়ি–সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা থেকে ৪ হাজার ৯০৬টি, চুলা থেকে ৪ হাজার ১১৭টি। এ ছাড়া ছোটদের আগুন নিয়ে খেলার কারণে ৯২৩টি, গ্যাসের লাইন লিকেজ থেকে ৭৭০টি, গ্যাস সিলিন্ডার ও বয়লার বিস্ফোরণ থেকে ১২৫টি এবং বাজি পোড়ানো থেকে ৮৭টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, বাসাবাড়ি বা আবাসিক ভবনে সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সারা দেশে বাসাবাড়িতে ৬ হাজার ৯৫৬টি আগুন লাগে, যা মোট আগুন লাগার ঘটনার ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। এ ছাড়া গোয়ালঘর ও খড়ের গাদায় ৪ হাজার ২৭৭টি, রান্নাঘরে ২ হাজার ৯৩৮টি, দোকানে ১ হাজার ৮২১টি, হাটবাজারে ১ হাজার ২৬৪টি, বিপণিবিতানে ৭৫৯টি, পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানে ৪০৩টি, হাসপাতাল–ক্লিনিক ও ফার্মেসিতে ২৪৮টি, রেস্তোরাঁয় ২৪৬টি, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে ২৩২টি, বস্তিতে ১৯৯টি, বহুতল ভবনে ১৪৭টি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৪০টি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৯৬টি এবং পাটগুদাম-পাটকলে ৯৪টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

গত বছর সারা দেশে স্থলপথে চলাচলকারী যানবাহনে ৫০৬টি, নৌযানে ৭৩টি ও ট্রেনে ১২টি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। মাসভিত্তিক অগ্নিকাণ্ডের পরিসংখ্যানে জানা যায়, গত বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে—এই তিন মাসে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ফায়ার নিরাপত্তায় কেউ টাকা খরচ করতে চান না। ১০ বছর আগে কেউ বিদ্যুতের কাজ করিয়েছেন, সেটা এখন কী অবস্থায় রয়েছে, তা পরীক্ষা করে দেখা হয় না। অগ্নিকাণ্ডের পেছনে মানুষের উদাসীনতা রয়েছে। মানুষ সচেতন না হলে আগুনের ঘটনা কমানো সম্ভব নয়।