‘জাগরণী’ নামে বিশেষ আয়োজন শুরু করেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী সংগীত শিক্ষার প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়ের মাসের প্রথম দিন আজ রোববার সকাল নয়টা থেকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সম্প্রচারিত হবে ছায়ানটের এই কার্যক্রম। জাতীয় সংগীত দিয়ে সূচনা হবে এটি।
গতকাল শনিবার বিকেলে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের রমেশচন্দ্র দত্ত স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক শিল্পী লাইসা আহমদ লিসা লিখিত বক্তব্যে জানান, একটি মানবিক সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৬১ সাল থেকে ছায়ানট সংগীত-সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করছে। মতাদর্শ বা বিশ্বাসে মানুষ ও দেশভেদে যত পার্থক্যই থাকুক, সবই এখন বিশ্বায়নের পথে ছুটছে। ছায়ানটও এর অংশী হতে চায়। বাংলা ১৪২৪ সনের বর্ষবরণে ছায়ানট সভাপতি সংগীতজ্ঞ সন্জীদা খাতুন আহ্বান জানিয়েছিলেন, আমাদের সাংস্কৃতিক অর্জনের শ্রেষ্ঠ দিকগুলো অন্তর্জালে তুলে ধরার। তারপর থেকেই প্রচেষ্টা চলছিল। এখন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একসঙ্গে ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছায়ানট তাদের নিজস্ব আধেয় সম্প্রচার করবে। এই আয়োজনের নাম হবে ‘জাগরণী’।
ছায়ানট সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতিদিন সকাল নয়টায় নতুন নতুন কনটেন্ট দেওয়া হবে। এতে থাকবে গান, আবৃত্তি বা গানের প্রশিক্ষণ, আলোচনাসহ সংগীত-সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়। ছায়ানট গত ছয় দশকে পথ চলায় হাজার হাজার গানের সম্ভার গড়ে তুলেছে। বিভিন্ন বিষয় ও আঙ্গিকের এসব গান থেকেই কনটেন্ট তৈরি করা হবে। বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিষয়ই প্রাধান্য পাবে।
ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ছায়ানটের এই কার্যক্রম সংস্কৃতি বিকাশে এক নতুন মাত্রা সংযোজন করবে। এত দিন মিলনায়তনের বাইরে সাধারণত দুটি অনুষ্ঠান করা হতো। রমনার বটমূলে নববর্ষ বরণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়াকেন্দ্র মাঠে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান। এখন থেকে দেশ ও দেশের বাইরের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংযোগ গড়ে তোলার জন্য ছায়ানটের কার্যক্রম অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানান হয় এবার আরও বেশি মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগের জন্য বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় অনুমোদনের জন্য কর্তৃপক্ষের কাজে আবেদন করা হয়েছে, আর অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও চলছে নিয়মিত চর্চায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক পার্থ তানভীর নভেদ ও জয়ন্ত রায়। সংগীতের শিক্ষক অভিজিৎ কণ্ডু, সেমন্তী মঞ্জরী,দীপ্র নিশান্ত, কার্যালয় প্রতিনিধি অনিন্দ্য রহমান, দুলাল ঘোষ, মুনরবী অমিয় মুহাম্মদ ও সুব্রত সাহা। সম্মেলনের শুরুতে শিক্ষার্থীরা সমবেত কণ্ঠে ‘হিমালয় থেকে সুন্দরবন হঠাৎ বাংলাদেশ’ এবং ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গান দুটি পরিবেশন করেন।