অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন ও স্পষ্টবাদী মানুষ ছিলেন আকবর আলি খান। আমৃত্যু তিনি গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য কাজ করে গেছেন। লেখক হিসেবেও ছিলেন অনন্য। তাঁর লেখা বইগুলো পড়াই হবে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সেরা উপায়।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান স্মরণে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক শোকসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই সভার আয়োজন করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের রসুল্লাবাদ ইউ এ খান উচ্চবিদ্যালয়ের ‘পুনর্মিলনী উদ্যাপন কমিটি-২০২২’।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই রসুল্লাবাদ গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেন আকবর আলি খান। শোকসভায় বিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিশিষ্টজনেরা স্মৃতিচারণা করেন।
শোকসভায় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, একজন আদর্শিক মানুষ ছিলেন আকবর আলি খান। অন্যায়ের সঙ্গে তিনি কখনো আপস করেননি।
এ সময় প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, ‘আকবর আলি খান যা সত্যি মনে করতেন, তা বলেছেন। সত্যনিষ্ঠ এই ব্যক্তিত্ব সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবেও সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। তিনি যে বাংলাদেশ চেয়েছিলেন, যে বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে।’
ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আকবর আলি খান আরও কিছুদিন বেঁচে থাকলে “আজব ও জবর-আজব অর্থনীতি” এবং “পরার্থপরতার অর্থনীতি”র মতো অনেক লেখা আমরা পেতাম।’ তিনি আয়োজকদের আকবর আলি খানের জীবন নিয়ে একটি স্মরণিকা বা বই প্রকাশ করার পরামর্শ দেন।
আকবর আলি খান বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন বলে উল্লেখ করেন ডিআরইউর সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন। তিনি বলেন, দেশ-জাতির উপকার হবে, এমন কোনো কাজে তিনি না বলতেন না।
এই সাংবাদিক নেতা আরও বলেন, অনেকেই মুখে ভালো ভালো কথা বলেন, কিন্তু নিজেদের জীবনে এর প্রতিফলন ঘটান না। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন আকবর আলি খান। তিনি যেমন সাধারণ জীবন যাপন করতেন, তা বিরল।
আকবর আলি খানের লেখা বইগুলো সবাইকে পড়ার পরামর্শ দিয়ে সাংবাদিক আবদুল কাইয়ুম (তুহিন) বলেন, ‘আকবর আলি খানের মতো মানুষ ভবিষ্যতে আর আসবে কি না, সন্দেহ আছে। আমরা তাঁকে জীবদ্দশায় পেয়েছিলাম, এটিই আমাদের গর্ব।’
রসুল্লাবাদ ইউ এ খান উচ্চবিদ্যালয়ের ৯১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জালাল উদ্দিন বলেন, আকবর আলি খান গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য কাজ করে গেছেন।
স্মরণসভা সঞ্চালনা করেন পুনর্মিলনী উদ্যাপন কমিটির সদস্যসচিব হাসান জাবেদ। তিনি বলেন, একজন মানুষ কীভাবে একটি ইনস্টিটিউটে রূপান্তরিত হতে পারেন, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আকবর আলি খান।
শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আবদুল হেকিম। সভায় আকবর আলি খানের ছোট ভাই কবীর আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন। তিনি পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।