‘বাবা, ইচ্ছা ছিল অনেক বড় হব। ভালো কিছু করব, কিন্তু হতে পারিনি। মাফ করে দিয়ো, ইতি তোমার মা মৌ’—বলপেন দিয়ে কথাগুলো লেখা ছিল নকশি ভিলা নামের একটি ভবনের ছাদের রেলিংয়ে। আর ভবনের সামনে পড়ে ছিল ফারজানা আক্তারের মরদেহ। ঘটনা সোমবার দুপুরের।
নকশি ভিলা রাজধানীর মৌচাক এলাকায়। ফারজানা আক্তারের বয়স ১৪ বছর, ডাকনাম মৌ। সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার হারাইরপাড়া গ্রামে। ফারজানা আবু মুসা ও শাহনাজ আক্তারের মেয়ে। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে সে ছিল তৃতীয়।
পুলিশ বলছে, স্কুলের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিল ফারজানা আক্তার। সেই হতাশা থেকে আত্মহত্যা করতে পারে সে। তার মরদেহ এখন ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ফারজানা আত্মহত্যা করেছে বলে মনে করছে তার পরিবারের সদস্যরাও।
শাহজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলামের ভাষ্যমতে, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। আলামত হিসেবে বলপেন ও তার জুতা জব্দ করা হয়েছে। ছাদের রেলিংয়ে লেখা কথাগুলোও জানা গেছে পুলিশের এই কর্মকর্তার বরাতে। তবে সেগুলো ফারজানার হাতের লেখা কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
ফারজানার মামা মোস্তফা কামালের সঙ্গে কথা হয়েছে প্রথম আলোর। তিনি বলেন, স্কুলের পরীক্ষায় ইংরেজি, গণিতসহ তিনটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিল ফারজানা। দশম শ্রেণিতে ভর্তির অনুরোধ নিয়ে কয়েক দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়েছিলেন। তবে তিনি সেটি মেনে নেননি। সোমবারও ভাগনিকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলেন তিনি।
স্কুলে ফারজানার সামনে তাঁকে নানা অপমানজনক কথা বলা হয়েছিল অভিযোগ করে মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা বাসায় ফিরে আসি। পরে সবার অগোচরে ছাদে গিয়ে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করে ফারজানা।’