বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে চায় ভারত

দিল্লিতে ভারত–বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে অঙ্গীকারবদ্ধ ভারত। সেই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিয়েছে দেশটি। আজ শুক্রবার দিল্লিতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে এই অবস্থান জানিয়েছেন।

দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর আজ সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রচারিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সংক্ষিপ্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে দ্রুত তিস্তা এবং অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধান, বাংলাদেশের রপ্তানিজাত পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক বাধা প্রত্যাহার এবং দুই দেশের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অবাধ সরবরাহ নিশ্চিত করা।

দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে কুশল বিনিময় করেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা

দুই দেশের জনগণের মেলবন্ধন বাড়াতে মাসুদ বিন মোমেন বাংলাদেশের জনগণের ভিসাপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে বিনয় কোয়াত্রার প্রতি অনুরোধ জানান। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব রোহিঙ্গা সমস্যা সমধানেও ভারতের সহযোগিতা চান।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা বাংলাদেশকে বিশ্বস্ত প্রতিবেশী হিসেবে উল্লেখ করেন এবং দুই দেশের বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি গ্লোবাল সাউথ এবং জি-২০–এর সদ্য সমাপ্ত ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের সঙ্গে এই সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে তাঁর দেশের নেতৃত্বের অঙ্গীকারের বিষয়টি তিনি উল্লেখ করেন। এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেন তিনি।

দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় দুই পররাষ্ট্রসচিব নিকট প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক এবং ২০২৩ সালে সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সংযুক্তি, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতে দুই প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলোর প্রসঙ্গ টেনে তাঁরা বলেন, এ ধরনের সহযোগিতার মধ্য দিয়ে শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটে।

বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব উন্নয়ন, ব্যবসা ও বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযুক্তি, বিদ্যুৎ ও সঞ্চালন লাইনের সংযোগ, নিরাপত্তা, পানি, কনস্যুলার এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উত্তরণের সময় যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, সেগুলো সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। দুই পক্ষ সীমান্তে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে পুনরায় জোর দিয়েছে।