ডেঙ্গুর প্রকোপ ঠেকাতে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে সংসদে বাহাস হয়েছে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারীর।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘শেখ হাসিনা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, জামালপুর বিল, ২০২৩’–এর ওপর আলোচনায় এই বাহাস হয়। আলোচনায় প্রথমে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ ঠেকাতে মশা মারতে প্রয়োজনে কামান দাগাতে হবে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের এক কোটি মশারি দেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
এর জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে মশারি কিনতে পারেন না, এমন মানুষ আছে বলে তাঁর জানা নেই। কিন্তু মশারি ব্যবহার না করার প্রবণতা আছে।
মৃত্যু কমাতে পারছে না স্বাস্থ্য বিভাগ
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, গ্রামগঞ্জেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। কোনোভাবে মৃত্যু কমাতে পারছে না স্বাস্থ্য বিভাগ। লাখের ওপর আক্রান্ত হয়ে গেছে, প্রায় সবাইকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে। প্রতি ২০০ জনে একজন মারা যাচ্ছেন, চিকিৎসা ব্যয়ে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এক লাখ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে, তাঁরা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে লার্ভা পরিষ্কার করবেন, ওষুধ দেবেন। এখন ওষুধ যদি ভেজাল হয়, তাতে কোনো কাজ না করলে ডেঙ্গু বাড়বেই।
মানুষকে মশারি দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ১ কোটি মশারি দিতে ৫০০ কোটি টাকা লাগবে। ১ কোটি মশারি দিলে রোগ অর্ধেক কমে যাবে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও বসার অনুরোধ করেন তিনি।
জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গুর বিষয়ে গোটা জাতি উদ্বিগ্ন। এ বছর সারা পৃথিবীতে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, পৃথিবীর ৫০ শতাংশ লোক ডেঙ্গু ঝুঁকিতে আছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা শহরে মশারি কিনতে পারে না, এমন মানুষ আছে বলে আমার জানা নেই। কিন্তু মশারি না ব্যবহার করার প্রবণতা আছে। মশারি ব্যবহার করে না। গ্রামগঞ্জে মানুষ আগে থেকে মশারি ব্যবহার করত, এখনো ব্যবহার করে।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যতটুকু করা সম্ভব, ততটুকু করছেন বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
‘একূল-ওকূল দুকূল হারাইছি’
বিল পাসের আলোচনায় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থাটা কী হয়েছে। ৫০ কেজি (প্রকৃতপক্ষে ৫৫ কেজি) স্বর্ণ সরকারের অধীনে থাকে এয়ারপোর্টে। সেই স্বর্ণ নিয়ে যায় গা, কোনো খবর নাই। প্রধানমন্ত্রী, আপনি একা কী করবেন।’
নিজের নির্বাচনী এলাকায় একটি রাস্তা করার দাবি করেছিলেন মুজিবুল হক। পাঁচ বছর ধরে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে এলেও রাস্তা হয়নি—এ কথা জানিয়ে মুজিবুল হক বলেন, ‘আরেকবার এমপি হই কি না, কারণ আওয়ামী লীগের সাথে জোট করলে আমাদের বলে আমরা নাকি গৃহপালিত। এখন আওয়ামী লীগের লোকও পছন্দ করে না, বিএনপিও পছন্দ করে না। একূল-ওকূল দুকূলই হারাইছি। কাজগুলো যদি না করে দেন তাহলে যাব কোথায়?’