মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ঘিরে ধরার চেষ্টা

নিরাপত্তা হুমকি দেখছেন না পররাষ্ট্রসচিব

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর শাহীনবাগে গতকাল বুধবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে ঘিরে ধরার ঘটনাকে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখার সুযোগ নেই বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও তাঁর মত।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি সেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের ৫০ বছর সম্পর্ক: সম্ভাবনা এবং আগামীর পথচলা’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেন।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গতকাল বুধবার রাজধানীর শাহীনবাগে বিএনপির নিখোঁজ নেতা সাজেদুল ইসলামের বাসায় যান। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় বাসার বাইরে একদল লোক তাঁকে ঘিরে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র গত বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনী র‌্যাব এবং বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাতজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর শাহীনবাগে গতকালের ঘটনা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে কি না, জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক তো অনেক দিনের পুরোনো। বেশির ভাগ দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বয়স প্রায় ৫০ বছরের কোঠায়। সুতরাং একটা ঘটনা বা এ ধরনের একটা আচরণে সেই সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলবে বিষয়টা এমন নয়। ওই রকম কোনো সম্ভাবনা আমরা দেখি না। আমাদের মন্ত্রী যেটা বলেছেন, সঠিক বলেছেন। এটাকে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। ঘটনার আকস্মিকতার কারণে উনাদের (যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিক্রিয়া হয়েছে। আমাদের মন্ত্রী বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। দেখা যাক, একটা ইস্যুতে দুটি দেশের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় না, সেটা নিষেধাজ্ঞা বা যা–ই হোক। তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সঙ্গে অবশ্যই আমাদের আরও অনেক যোগাযোগ হবে।’

‘পুরো বছরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে’—উল্লেখ করে সচিব বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সফর বিনিময় হয়েছে। একটা গুজব ছিল ১০ ডিসেম্বর আবার নিষেধাজ্ঞা আসছে। কিন্তু সে রকম কিছু ঘটেনি। এতে প্রমাণিত হয়, দুই পক্ষই সম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

কূটনীতিকেরা কোথায় যাচ্ছেন, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানছে না। অথচ লোকজন ওই জায়গাগুলোতে গিয়ে তাদের দাবিদাওয়া তুলে ধরছে—এমন এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘কূটনীতিকেরা যদি কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় যান বা স্পর্শকাতর এলাকায় যান, তখন একটা অনুমতির প্রয়োজন আছে। এ ছাড়া ঢাকা শহরে কখন কোথায় যাবেন, এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানোর কোনো বিধান নেই। তবে এলাকাভেদে আগে থেকে অনুমতি নেওয়া থাকলে ভালো। তাঁরা (রাষ্ট্রদূত) নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের জানালে সঠিক নিরাপত্তাব্যবস্থা করে দেওয়া যায়। সেটা অনুরোধের ভিত্তিতে।’