ফেনী সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনীর সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম সরকারসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন সাবেক যুবলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর শাখাওয়াত হোসেন ভূঁঞা।
আজ বৃহস্পতিবার ফেনী সদর উপজেলা আমলি আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মো. শাফায়াত শুনানি শেষে তদন্ত করে মামলার বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
গত ১৮ নভেম্বর আদালতে অভিযোগটি দায়ের করেন শাখাওয়াত হোসেন ভূঁঞা। এতে ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ মধুপুরে তাঁর গ্রামের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে ও ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন এই যুবলীগ নেতা। তিনি ২৮ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয়ে আসামি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পরে আজ আদালত আবেদনের বিষয়ে বাদীর আইনজীবীর বক্তব্যসহ শুনানির পর ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে (এডিএম) তদন্ত করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আগামী ২২ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বাদীপক্ষের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বিচারক আবেদন গ্রহণ করে বাদী ও আইনজীবীর বক্তব্য শুনেছেন। অভিযোগটির বিষয়ে শুনানি শেষে ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন প্রদানের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলায় আসামি আরও যাঁরা
নিজাম উদ্দিন হাজারী ও জাহাঙ্গীর আলম সরকার ছাড়া মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, ফেনী পুলিশের তৎকালীন বিশেষ শাখার (ডিএসবি) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আমিনুল ইসলাম, ফেনী সদর মডেল থানায় সাবেক ওসি আবুল কালাম আজাদ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ( ডিবি) রাশেদ খান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন হাজারীর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী পুলিশের এসআই নজরুল ইসলাম, এসআই মাহবুবুর রহমান, ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ উল্যাহ, ফেনী পৌর যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।
যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে
বাদী শাখাওয়াত হোসেন ভূঁঞা ফেনী জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি তাঁর আরজিতে অভিযোগ করে বলেছেন, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী অস্ত্র ও গুলির মামলায় ১০ বছর ও ৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে চট্টগ্রাম কারাগারে ছিলেন। কিন্তু জালিয়াতির মাধ্যমে তিনি কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। পরে ফেনীতে এসে নানা কৌশলে প্রথমে ফেনী পৌরসভার মেয়র ও পরে ফেনী-২ আসনে বিনা ভোটে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।
অভিযোগে বলা হয়, এ ঘটনা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে একটি রিট করেছিলেন বাদী। এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে নিজাম উদ্দিন হাজারী তাঁকে গুম ও খুনের পরিকল্পনা করেন।