ইট-সুরকির এই নগরীতে স্বস্তি ও শীতলতার পরশ খুঁজতে হয় এখন এসিতে। বাসাবাড়ি কিংবা কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে এসির ব্যবহার। গরমের দাপটে মানুষ বাধ্য হচ্ছে ঘর শীতলীকরণ এই যন্ত্রটি নিয়ে আসতে। এসি কেনার পর দক্ষ কাউকে দিয়ে ঘরে এই যন্ত্রটি স্থাপন করা হলো, কিন্তু নিত্যব্যবহারে পরিবারের অনেক সদস্যই অভ্যস্ত হতে একটু সময় নেন।
ঘরে নতুন এসি এলে কীভাবে প্রতিদিন তা ব্যবহার করতে হয়—এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ইলেকট্রোমার্টের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার মো. জুলহাক হোসাইন। তিনি জানান, এসি চালানোর ক্ষেত্রে এর নানা ধরনের মোড আছে। নতুন এসি কেনার পর সেগুলো একটু বুঝে নিলেই এসি চালাতে তেমন একটা বেগ পেতে হয় না।
ডিফল্ট মোড : সাধারণত ঘরবাড়ি এবং কর্মক্ষেত্রের এসিতে আমরা সবাই কুল মোড ব্যবহার করে থাকি। কুল মোডকে বলা হয় এসির ডিফল্ট মোড। এই মোডের আদর্শ তাপমাত্রা হলো ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রায় চালালে এসির কমপ্রেসরে চাপ কম পড়ে, অনেক দিন পর্যন্ত ঝামেলাহীনভাবে যন্ত্রটি ব্যবহার করা যায়। বিদ্যুৎও সাশ্রয় হয়।
কুইক কুল মোড: ঘরের তাপমাত্রা যদি ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর বেশি হয়, তখন দ্রুত ঘর ঠান্ডা করার জন্য কুইক কুল মোড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কুইক কুল মোডে ১৬-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এসি চলে এবং কিছুক্ষণের মধ্যে ঘরের তাপমাত্রাকে কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। এতে বিদ্যুতের ব্যবহার হয় সবচেয়ে বেশি।
ফ্যান মোড: এই মোডে এসির ভেতরের ফ্যান অনবরত ঘুরে বাতাস তৈরি করে। এতে এসির কমপ্রেসর বন্ধ থাকে। কমপ্রেসর বন্ধ থাকার কারণে এই মোডে এসি চালালে ঠান্ডা বাতাস বের হয় না। ফলে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয় সবচেয়ে বেশি।
ড্রাই মোড: বছরের কিছু সময় আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে তাপমাত্রা কম থাকে কিন্তু ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে যায় মানুষ। এই আর্দ্রতার কারণে এসি চালিয়েও স্বস্তি পাওয়া যায় না। ড্রাই মোড বাতাসের অতিরিক্ত আর্দ্রতা দূর করে কিছুটা স্বস্তি এনে দেয়। এই মোডে বাতাস থেকে অতিরিক্ত আর্দ্রতা দূর করার জন্য এসির ফ্যানের গতিবেগ কম থাকে এবং কমপ্রেসর কিছু সময়ের জন্য চালু থাকে। এতে আপনার ঘর একেবারে ঠান্ডা হয়ে যায় না, আবার গরমও থাকে না। ফ্যান মোডের পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য আরেকটি ভালো উপায় হচ্ছে ড্রাই মোড।
স্লিপ মোড: রাতে এসি চালিয়ে ঘুমালে একটা সময় রুম এবং রুমে থাকা সদস্যদের শরীর বেশ ঠান্ডা হয়ে যায়। এই সময়ে ব্যবহার করতে হবে স্লিপ মোড। স্লিপ মোডে এসি চললে প্রতি ঘণ্টায় এসির তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ে। এতে করে ঘুমানোর সময় অনেক বেশি ঠান্ডাও লাগে না, আবার শীতল পরশে ঘুমও হয় ভালো। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য স্লিপ মোড বেশ কার্যকর।
এসি চালু করার সময় অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে ঘরের কোনো জায়গা দিয়ে যেন বাতাস বাইরে যেতে না পারে। এসি চালু অবস্থায় বারবার দরজা খোলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
এসি সব সময় ২৫ থেকে ২৬ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখা ভালো।
সপ্তাহে অন্তত একবার এসির ইনডোরের ঢাকনা খুলে ভেতর থেকে ফিল্টারটি বের করে পরিষ্কার করে নিলে পর্যাপ্ত ঠান্ডা পাওয়া যাবে।
ঘরে যদি ছোট শিশু অথবা বৃদ্ধ মানুষ থাকে কিংবা কম মানুষ থাকে, সে ক্ষেত্রে এসির আইফিল অপশন চালু করে রাখলে প্রয়োজনমতো ঠান্ডা সরবরাহ করবে।
নতুন কেনা এসি ব্যবহারে প্রথম থেকেই মাথায় রাখতে হবে, বছরে অন্তত দুবার এসি সার্ভিসিং করালে এটি যেমন ভালো থাকবে তেমনি দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার করা যাবে।