জাতীয় সংসদ ভবন
জাতীয় সংসদ ভবন

সংসদে মুজিবুল হকের দাবি

ব্যাংক খালি হয়ে গেছে

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক সংসদে দেওয়া বক্তব্যে দাবি করেছেন, ব্যাংক তো খালি হয়ে গেছে। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক চুপচাপ বসে থাকে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এগুলো দেখার দায়িত্ব কার।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক এসব কথা বলেন।

দেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে মুজিবুল হক বলেন, ‘ব্যাংক তো খালি হয়ে গেছে। ব্যাংকের মাধ্যমে এই যে টাকা যায়, নিশ্চয়ই এটা ওভার ইনভয়েজ আন্ডার ইনভয়েজ (আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দেওয়া)। এগুলো দেখার দায়িত্ব কার? আমরা কোথায় যাব? অর্থমন্ত্রী ও বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা যদি এগুলো না দেখেন...।’

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকই (বিএফআইইউ প্রধানের বক্তব্য) বলছে, ব্যাংকের মাধ্যমে (আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে) টাকা পাচার হয়। এটা তাদেরই প্রতিবেদন। তাহলে এত দিন তারা কী করেছিল? বাংলাদেশ ব্যাংক কেন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, বাংলাদেশ ব্যাংক কি জানে না কোন আইটেমের (পণ্য) দাম কত?

মুজিবুল হক বলেন, অর্থ পাচার নিয়ে গত সংসদেও তাঁরা অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু সাবেক অর্থমন্ত্রী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি।

পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সরকার যদি শক্তভাবে এগুলো মোকাবিলা না করে, তাহলে দেশ খালি হয়ে যাবে।

এন্ডোস কপি করাতে গিয়ে মৃত্যু ও খতনা করাতে গিয়ে শিশুমৃত্যুর কথা উল্লেখ করে মুজিবুল হক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি কঠিন হোন। মানুষ এখন ভাবছে সরকারি দল, বিরোধী দল কী করে? জবাবদিহি কোথায়? সরকার শক্ত না হলে আমাদের তো যাওয়ার জায়গা নাই।’

ন্যাটোর মতো নিরাপত্তা কাউন্সিল

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের হুইপ সাইমুম সরওয়ার বলেন, মিয়ানমার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জর্জরিত। সেখানে বিপ্লবীরা যুদ্ধ করছে। মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বলেছেন, মিয়ানমারের যুদ্ধ দীর্ঘ হতে পারে। এই যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ ও ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।

কক্সবাজার এলাকা থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বলেন, সার্ক অকার্যকর হয়ে আছে। এখন সময় এসেছে, নতুন করে ন্যাটোর মতো বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ নিয়ে একটি নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন করা।

মানুষ উন্নয়নকে সমর্থন করেছে

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মানুষ উন্নয়নকে সমর্থন করেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে সেটা প্রতিফলিত হয়েছে। যাঁরা নৌকা প্রতীকের বাইরে নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা বলে, স্লোগান দিয়ে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনীতি মানুষ গ্রহণ করেছেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, তারেক রহমান লন্ডনে বসে গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের পথকে বিচ্যুত করতে পারেনি। দেশের মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।