গোপালগঞ্জে আধুনিক টিকা স্থাপনা তৈরি করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে কারিগরি সহায়তা দেবেন ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রোজেনেকান টিকার উদ্ভাবক অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা। টিকা প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আজ রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে টিকা নিয়ে এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। যুক্তরাজ্যের লন্ডন, নেদারল্যান্ডসের রটারডাম ও সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সফরের বিষয়বস্তু তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি লন্ডন গিয়েছিলেন মূলত অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারবিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য। লন্ডন সফরের সময় তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা স্থাপনায় যান। সেখানে করোনাভাইরাস ঠেকানোর অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উদ্ভাবনকারী বিজ্ঞানী দলের প্রধান এন্ড্রো পোলার্ডসহ অন্যান্য বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তিনি বলেন, ‘টিকার জন্য আমরা তাঁদের কাছে কারিগরি সহায়তা চাই। তাঁরা তা দিতে রাজি হয়েছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. টিটো মিঞা ও এসেনসিয়াল ড্রাগস্ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসানুল হক।
গোপালগঞ্জের টিকা স্থাপনা হবে ইডিসিএলের অধীন প্রকটি প্রতিষ্ঠান। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, টিকা প্রকল্পে ২৫ কোটি মার্কিন ডলার (২৫০ মিলিয়ন) সহায়তা দেবে এডিবি।
ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এহসানুল হক বলেন, টিকা স্থাপনার নকশা, বিশেষায়িত জনবল ও প্রযুক্তির জন্য বাইরের সহায়তা নিতে হবে। প্রযুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেনেভা গিয়েছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বার্ষিক অনুষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য। তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল ছিল। সেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ–পূর্ব অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। তিনি আগামী অক্টোবরে ঢাকায় দক্ষিণ–পূর্ব অঞ্চলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের একটি আঞ্চলিক সম্মেলনের প্রস্তাব করেছেন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবে রাজি হয়েছি। ৭–১০ অক্টোবর ঢাকায় এই সম্মেলনের কথা ভাবছি। প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধনের কথা ভেবেছি। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাইড ইভেন্টও হবে।’
ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। এসব মন্ত্রণালয়কে নিয়ে একটি সমন্বিত সভার আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানান।
স্বাস্থ্য বাজেটের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অহেতুক কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে না। হাতে নেওয়া প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি প্রতি মাসে জানার চেষ্টা করবেন।