এডিসি হারুন-কাণ্ড: তৃতীয় দফায়ও প্রতিবেদন দেয়নি তদন্ত কমিটি

হারুন অর রশিদ
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের তিন নেতাকে মারধরের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তৃতীয় দফায় প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। ওই মারধরের ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের বরখাস্ত হওয়া অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

গতকাল বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়নি বলে জানিয়েছেন ডিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমপির ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির কেউ মুখ খুলতে রাজি হননি।

এডিসি হারুন অর রশিদ ও রাষ্ট্রপতির একান্ত সহকারী সচিব (এপিএস) আজিজুল হকের সঙ্গে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জের ধরে শাহবাগ থানায় নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় ডিএমপি কমিশনার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। দুই দিনের ভেতরে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়। দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে ব্যর্থ হয়ে পাঁচ দিনের সময় চেয়ে আবেদন করে তদন্ত কমিটি। পরে কমিশনার তাঁদের আবেদন মঞ্জুর করেন।

গত মঙ্গলবার তাঁদের প্রতিবেদন দাখিলের শেষ দিন ছিল। কিন্তু কমিটি প্রতিবেদন দাখিল না করে আবার সাত দিন সময় বৃদ্ধির আবেদন করে। কমিশনার তিন দিন সময় বাড়িয়ে দেন। এ হিসাবে গত রোববার প্রতিবেদন দাখিলের শেষ সময় ছিল। কিন্তু রোববারে প্রতিবেদন না দিয়ে নতুন করে তিন দিনের সময় চায় কমিটি। সেই হিসাবে গতকাল বুধবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল।

তদন্ত কমিটিসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, তদন্ত কমিটির কাছে এডিসি হারুন, এডিসি সানজিদা আফরিন, তাঁর স্বামী রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। জড়িত ছাত্রলীগের নেতাদেরও বক্তব্য নিয়েছে তদন্ত কমিটি। তাঁদের বক্তব্যে সেদিন কী ঘটেছিল, তা জানা গেছে। এ ঘটনায় সব পক্ষের দায় পেয়েছে তদন্তসংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের তদন্ত শেষ হয়েছে। তাহলে কেন প্রতিবেদন জমা দেওয়া হচ্ছে না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।

৯ সেপ্টেম্বর রাতে বারডেম হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানায় আটকে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের তৎকালীন এডিসি হারুন অর রশিদ এই মারধরে নেতৃত্ব দেন। পরে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ঘটনায় শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম মোস্তফাকেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।