করোনার সংক্রমণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। তাঁর মতে, দুই দেশের মধ্যে নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বেড়েছে এবং তা যথেষ্ট শক্তিশালী ভিত্তি পেয়েছে। তিনি বলেন, করোনার সংক্রমণের জটিল সময়ে চীনের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ। আর চীনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পর বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে চীন।
দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে এমন মন্তব্য করেছেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। গতকাল রোববার বিকেলে তিনি প্রথম আলো কার্যালয় পরিদর্শনে আসেন। তাঁকে স্বাগত জানান প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। এরপর সম্পাদকের সঙ্গে মতবিনিময় করেন রাষ্ট্রদূত। পরে তিনি দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে কথা বলেন প্রথম আলোর কূটনৈতিক প্রতিবেদকের সঙ্গে।
তিন বছর আগে চীনের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় আসেন লি জিমিং। দায়িত্ব পালন শেষে এই ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন। দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে লি জিমিং বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পাওয়াটা ছিল তাঁর কাছে যথেষ্ট মর্যাদার। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে তাঁকে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
লি জিমিং জানান, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে চীনের অঞ্চল ও পথের উদ্যোগে (বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ—বিআরআই) সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ। গত তিন বছরে বিআরআইয়ের আওতায় বাণিজ্য, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে পায়রায় তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল ও দাশেরকান্দি পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পের কথা বলেন তিনি।
গত ১২ বছর অব্যাহতভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। গত তিন বছরে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বেড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ২০২২ সালের শেষে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ২৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এটি ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রসঙ্গ আলোচনা করতে গিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ‘বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম হিসেবে আমার সহকর্মীদের কাছ থেকে সব সময় প্রথম আলোর প্রশংসা শুনে এসেছি। এটি শুধু পত্রিকা নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু। বাংলাদেশের গণমাধ্যম বেশ বৈচিত্র্যময় ও গতিশীল। এ দেশের গণমাধ্যমের পেশাদারত্ব চিত্তাকর্ষক।’
আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গণমাধ্যম পশ্চিমা সূত্রের ওপরই নির্ভরশীল বলে মনে করেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।